সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদী অধ্যুষিত দুর্গম জালালপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় অসময়ে তীব্র নদীভাঙন শুরু হয়েছে। যমুনার ভাঙনে অর্ধশত বাড়িঘর, জমিজমা ও গাছপালা যমুনাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের তান্ডবলীলা তীব্রতর হওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে ভাঙনকবলিত মানুষ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘যমুনার ভাঙন থেকে জালালপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাকে রক্ষা করতে ২০২১ সালে ৬৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনার পশ্চিত তীরের ৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও পরবর্তীতে কাজ বন্ধ করে দেয় তারা। ফলে ১ সপ্তাহ ধরে জালালপুরে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়।’

গত ১ সপ্তাহে যমুনার করালগ্রাসে বিলীন হয়েছে অর্ধশত ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমিসহ নানা স্থাপনা। ভাঙনের তীব্রতায় আতঙ্ক আর উদ্বিগ্নে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরের মানুষ। এলাকাবাসী জানান, ভাঙনের তীব্রতা এতই বেশি যে, এলাকাবাসী ঘরবাড়ি সরানোরও সময় পাচ্ছেন না। চোখের সামনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে সহায়-সম্বল।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ না করায় বাড়িঘর-জমিজমা সব নদীর মধ্যে চলে যাচ্ছে। ভাঙনকবলিতরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর উত্তরপাড়া মহল্লার ওমর আলী, আবু হানিফ, পলাশ মন্ডল, বাবু, সাদ্দাম, আরিছ, খলিল, আব্দুস সালাম, ওমর আলী, জেলহাজ, ইয়াছিনসহ ভাঙনকবলিত এলাকার অর্ধশত পরিবার ঘরবাড়ি, জমিজমা হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবিক দিনযাপন করছে। জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর উত্তরপাড়া মহল্লার আব্দুস সালাম অভিযোগ করেন, ‘ভাঙনকবলিত এলাকার ১০, ১১ ও ১২ পয়েন্টে ঠিকাদার ভাঙন রোধে কোনো কাজ না করায় এলাকাবাসীর ক্ষয়ক্ষতি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, আগামী বর্ষা মৌসুম আসার আগেই জালালপুরের ভাঙনকবলিত এলাকায় ক্রসবাঁধ নির্মাণ করা হবে। জালালপুরসহ ৩টি স্থানে ভাঙন রোধের চেষ্টা করার পরও ভেঙে গেছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যে চর জেগেছে; সেখানে একটি ক্রসবাঁধ নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এদিকে, ভাঙন রোধ প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে এলাকাটি স্থায়ীভাবে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার জোর দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভাঙনকবলিত এলাকার শত শত মানুষ।