মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি

  ১৩ অক্টোবর, ২০২২

বাবাকে হত্যার অভিযোগে মায়ের নামে ছেলের মামলা!

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

বাবাকে হত্যার অভিযোগে মায়ের নামে মামলা করেছেন ছেলে। বাদী এ মামলায় তার আপন মামাসহ ৫ জনকে আসামি করেছেন। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরো ৪/৫ জনকে। চাঞ্চল্যকর মামলাটি করেছেন মাগুরার মহম্মদপুরের বড়রিয়া গ্রামের সদ্য প্রয়াত আবু বক্কার শেখের ছেলে সিজান মাহমুদ সাগর। বাবা মারা যাওয়ার ১০ দিন পর গত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) মাগুরা আদালতে মামলাটি রুজু করেন। গত বুধবার (১২ অক্টোবর) মহম্মদপুর আমলী আদালত মাগুরার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মু. হাবীবুর রহমান দরখাস্তটিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করে পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের জন্য মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার খবর পেয়ে আসামিরা আত্মগোপন করেছেন। আসামিদের বাড়িতে গিয়ে এবং তাদের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

মামলার আরজি মতে, গত ২ অক্টোবর ভোরে মারা যান আবু বক্কার শেখ। তিনি দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর সৌদিতে ব্যবসা করতেন। এ কারণে এলাকায় তিনি ‘ধনী বক্কার’ নামে পরিচিত। প্রবাসে থাকার সুযোগে তার স্ত্রী জনৈক রকিবুল ইসলাম হিরকের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বহুবার বারণ করেও ফল হয়নি। একমাস আগে তার স্ত্রী ওই প্রেমিকের সঙ্গে নিরুদ্দেশ হন। এক সপ্তাহ পর ফিরে এলে তার স্বামী কারণ জানতে চাইলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে স্বামীকে খুন করার হুমকি দেন। ঘটনার এক দিন আগে বাদীর আপন মামা মাছুদুর রহমানের বাড়িতে আসামিরা বসে আবু বক্কার শেখকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী ঘটনার দিন ২ অক্টোবর ভোর রাতে আবু বক্কারকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার পর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর আসামিরা তড়িঘড়ি করে বক্কার শেখের লাশ দাফন করে দেয়।

বাদীর আরজি অনুযায়ী, বাবা মারা যাওয়ার রহস্য জানতে পেরে, মৃত্যুর ১০ দিন পর গত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) তার বড় ছেলে সিজান মাহমুদ সাগর বাদী হয়ে মাগুরা আদালতে মামলা করেন। এ মামলায় বাদীর মায়ের কথিত প্রেমিক রকিবুল ইসলাম হিরককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে তার মা সিমা পারভীনকে। ৫ নম্বর আসামি করেছেন আপন মামা মাছুদুর রহমানকে। এই মামলায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত রয়েছে আরো ৪/৫ জন। মৃতের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের কথাও বলা হয়েছে মামলায়।

বাদীর দরখাস্তটি আমলে নিয়ে গত বুধবার (১২ অক্টোবর) মাগুরার বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মু. হাবীবুর রহমান দরখাস্তটিকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করে পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের জন্য মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।

অপরদিকে, মায়ের নামে ছেলের মামলার বিষয়টি এলাকায় টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার বাদী সিজান মাহমুদ সাগর বলেন, ‘আসামিরা পরস্পরে যোগসাজস করে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে আমার পিতাকে খুন করেছে। আমি ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।’

মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায় বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা হাতে পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাবা,মামলা,হত্যা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close