গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ১১ অক্টোবর, ২০২২

সিরাজগঞ্জে সলপের ঘোলের চাহিদা বৃদ্ধি

সিরাজগঞ্জের সলপে ঘোল বিক্রয়কেন্দ্র, ছবি : গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী

ষড় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। সিরাজগঞ্জে শরৎ ঋতুকে ঠেলে ভ্যাপসা গরম এখনও বিরাজমান। মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এই ভ্যাপসা গরমে। গামছা, রুমাল আর টিস্যুপেপার এখন তাদের নিত্যসময়ের সঙ্গী। বিদ্যুতের আনাগোনায় জনজীবন অতিষ্ঠ। এই গরমে উল্লাপাড়া উপজেলার সলপের ঐতিহ্যবাহী ঘোলের দোকানগুলোতে চলছে জমজমাট ব্যবসা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘোলের চাহিদা ও বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় ঘোল কারখানার কর্মীদের কর্মকা-ও বেড়ে গেছে অনেক। উল্লাপাড়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বেলকুচি, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ সদর শাহজাদপুর উপজেলা থেকে ক্রেতারা প্রতিনিয়তই সলপ স্টেশনে ঘোল ও মাঠা কিনতে আসেন। প্রতি কেজি ঘোল বিক্রি হচ্ছে আগের মতই ৫০ বা ৫৫ টাকা এবং মাঠা বিক্রি হচ্ছে ৮০ বা ৯০ টাকা দরে। ক্রয়কৃত ঘোল ঘরে সংরক্ষন করে তৃষ্ণা মেটান সকলে।

জানা যায়, ব্রিটিশ আমল থেকে তৎকালীন সলপ সান্যাল জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় সলপে ঘোলের কারখানা গড়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠার সময়ে সলপ থেকে কলকাতায় যেত এই ঘোল। সেই সময় থেকেই সলপের ঘোলের খ্যাতি ছড়িয়ে রয়েছে ভারত ও বাংলাদেশে। এখনও সলপের ঘোলের চাহিদা রয়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

প্রযুক্তি ও সভ্যতার বিকাশে এখন বরফ দিয়ে ঘোল পাঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে ক্রেতারা নিশ্চিন্তে ঘোল নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। সলপে এখন ৭টি ঘোলের কারখানা রয়েছে। এখানে প্রতিদিন শতাধিক মন ঘোল তৈরি হয়। কারখানার মালিকদের মধ্যে আব্দুল মালেক, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল খালেকের কারখানায় বেশি ঘোল তৈরি হয়ে থাকে।

সিরাজগঞ্জের আব্দুল হালিম, উল্লাপাড়া উপজেলার বড়লক্ষীপুর গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ, ব্যবসায়ী বারেক মন্ডল ও কামারখন্দের জিল্লুর জানান, সলপের ঘোলের স্বাদ অতুলনীয়। তাই মাঝে মাঝেই মটরসাইকেলে এসে নিজের এবং পরিবারের জন্য ঘোল কিনে নিয়ে যাই। সিরাজগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় সলপের ঘোল বিক্রি হয়। পঞ্চক্রোশি হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক হাবিব-উজ-জামান বলেন, সলপের ঘোলের চাহিদা অনেক বেশি। তাই নিত্যদিনই এখানে ভিড় লেগে থাকে।

রিক্সাচালক মজিদ বলেন, গরমে গাইমা গেছি তাই এক গ্লাস গোল খাইল্যাম।

ঘোল বিক্রেতা আব্দুল খালেক বলেন, বিগত রমজান মাসের মতই এবার ভ্যাপসা গরমে ঘোলের চাহিদা বেড়ে গেছে। বিশেষত সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পাইকারি দরে ঘোল কিনে নিয়ে যান। এখানে প্রতিদিন শতাধিক মন ঘোল বিক্রি হয় বলে জানায় ঘোল ব্যবসায়ীরা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঘোল,সিরাজগঞ্জ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close