গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ০১ অক্টোবর, ২০২২

জমির মূল্য না পাওয়ায় শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে হালচাষ!

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের জমিতে হাল চাষ করেছেন জমির মালিক দাবি করা ব্যক্তিরা। স্টেডিয়াম নামটির বিশালতা থাকলেও বাস্তবে তার কোনোই মিল নেই। প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের শেষের দিকে নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কোনো খেলাই হয়নি এখানে। উপরন্তু স্টেডিয়ামে করা হচ্ছে হালচাষ, লাগানো হয়েছে গাছের চারা। স্টেডিয়ামের সামনে রাখা হয়েছে খড়ের বস্তা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সুবিশাল স্টেডিয়ামটির দক্ষিণপাশে একটি পাকাঘর ও শৌচাগার রয়েছে। তার পাশেই রাখা হয়েছে খড়ি-লাকড়ি। দক্ষিণ দিকে করাতকলের গাছের গুল রাখা হয়েছে। মাঠের এক অংশে বসেছে হাট। মাঠের দুপাশে কিছু ইট-সিমেন্টের তৈরি বেঞ্চ। তার কয়েকটির ওপরের পাটনি নেই। আর স্টেডিয়ামের পুরো মাঠে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করা হয়েছে। মাঠের তিন-চতুর্থাংশে গাছ লাগানো হয়েছে। বোঝার উপায় নেই যে এটি একটি মিনি স্টেডিয়াম।

স্টেডিয়ামে হালচাষ ও গাছ লাগিয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, এই জমিগুলো তাদের। কিন্তু স্টেডিয়াম করার জন্য জায়গাটি নির্ধারণ করা হলে স্থানীয় নেতাকর্মীর আশ্বাসে তাদের জমিগুলো স্টেডিয়ামে দিয়ে দেন। সেখানে শর্ত ছিল ন্যায্যমূল্য দেয়ার। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো কিছুই পাননি। উপায় না পেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করেন জমির মালিকেরা। তারপর থেকে হালচাষ করেছেন তারা। জমির মালিক আব্দুল বারিক বলেন, নেতারা বলেছিলেন জমির টাকা দিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু টাকা পয়সা না পাওয়ার কারণে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

লোকমান আলী শেখ জানান, জমিতে মাটি কাটতে আমরা বাধা দিয়েছিলাম। কিন্তু শাহজাহান চেয়ারম্যান জোর করে কাইটছে। তারা কইছে আমাগোরে টাকা দিবো। আমার ৬৭ শতক জমি তারা বেদখল দিয়া মাঠ বানাইছে। আমার থাইকা ফাঁকি দিয়া জাগা নিছে। ৮৭ শতাংশ জমির মালিক শেফালী জানান, তার জমিগুলো স্টেডিয়ামের জন্য যে নেয়া হয়েছে তিনি নিজেই জানেন না। পরে চেয়ারম্যানরা টাকা দেয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তারা পরে আর তা দেননি। তাই নিজের জমিতে হালচাষ করেছেন তারা। স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

এ বিষয়ে কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। বিষয়টি অবগত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিরাজগঞ্জ,কাজিপুর,শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম,হাল চাষ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close