এম কবির, টাঙ্গাইল

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

গোপালপুরবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত সাফ জয়ী কৃষ্ণা রানী

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

হাজারো মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন সাফ জয়ী কৃষ্ণা রানী সরকার। শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জয় করে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার উত্তর পাথুলিার প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে ঘরে ফিরছেন। তাই আনন্দের জোয়ারে যেন ভাসছে পুরো গ্রাম। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই উত্তর পাথালিয়া গ্রামে সাজসাজ রব পড়ে যায়। কৃষ্ণাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য তাদের বাড়িতে প্যান্ডেল তৈরী করা হয়। গ্রামের শত শত মানুষ অপেক্ষা করে কৃষ্ণাকে এক নজর দেখার জন্য। এছাড়াও কৃষ্ণাকে বরণ করার জন্য তৈরী ছিল গোপালপুর সূতী ভিএম পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ৩-১ ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশকে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা এনে দেন মেয়েরা। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরে বাংলাদেশ ভাসে আনন্দের জোয়ারে। সেখানে কৃষ্ণা রাণী সরকারের জোড়া গোলে হিমালয় কন্যাদের পরাজিত করে। তাই সারাদেশের সাথে টাঙ্গাইলের গোপালপুরেও আনন্দের বন্যা বইয়ে যায়।

কৃষ্ণার ছোট ভাই পলাশ চন্দ্র সরকারকে সাথে নিয়ে বেলা আড়াইটার দিকে একটি প্রাইভেটকারে চেপে গোপালপুর সূতী ভিএম পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে যান। তখন স্কুলের শত শত শক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও লাল গালিচা সংবর্ধনা দেন। এ সময় বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান তার মুখে মিষ্টি তুলে দেন। কৃষ্ণাও সবাইকে মিষ্টি খাওয়ান। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ সময় তার অটোগ্রাফ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কৃষ্ণাও তাদের অটোগ্রাফ দেন ও সাথে ছবি তুলেন।

এ সময় কৃষ্ণা রানী সরকার বলেন, পৃথিবীর আলো দেখার পর কখনোই সুখের মুখ দেখিনি। যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি, সেদিন থেকেই বাবাকে কষ্ট করতে দেখেছি। মা অনেক কষ্ট করেছে। এই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ফুটবল খেলতে হয়েছে। সব বাঁধা বিপত্তি অতিক্রম করে আজ এখানে আসতে পেরেছি। আমার এই সাফল্য কোচ ও শিক্ষকদের সহযোগিতার জন্য হয়েছে। আমি তাদেরসহ গোপালপুরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আরও ভালো পরিসরে খেলে দেশের জন্য ভালো কিছু উপহার দিতে পারি সেজন্য সকলের দোয়া চাই। আমি চাই এই প্রতিকূলতা ভেদ করে এখান থেকে আরও নারী ফুটবল খেলোয়াড় বেরিয়ে আসুক। যারা দেশেকে অনেক উপহার দিতে পারবে। পুজোতে আমি আমার মায়ের জন্য একটি বালা কিনে এনেছি। বাবার জন্য এনেছি পাঞ্জাবী ও পায়জামা। এছাড়াও আত্বীয়স্বজনের জন্য কিছু কাপড় এনেছি।

কৃষ্ণার মা নমিতা রানী সরকার বলেন, ফুটবল খেলার জন্য যারা মেয়েকে খারাপ বলত। আজ তারাই এসেছে সংবর্ধনা দিতে। আমি খুব খুশি ও আনন্দিত। আমি দেশবাসীর কাছে কৃষ্ণার জন্য আর্শীবাদ কামনা করি।

কৃষ্ণার বাবা বাসুদেব চন্দ্র সরকার বলেন, মেয়ের সাফল্যে খুব খুশি হয়েছি। এলাকার মানুষ ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছে। কৃষ্ণা যেন দেশের জন্য আরো গৌরব বয়ে আনতে পারে সেই আশীর্বাদ চাই।

গোপালপুর সূতি ভিএম পাইলট স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক ও কৃষ্ণার কোচ গোলাম রায়হান বাপন বলেন, কৃষ্ণার সাফল্যের জন্য আমরা গর্বিত। দেশের জন্য আরও ভালো কিছু করবে এটাই প্রত্যাশা করি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গোপালপুরবাসীর ভালোবাসা,ভালোবাসায় সিক্ত,সাফ জয়ী কৃষ্ণা রানী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close