ফরিদপুরে হঠাৎ বেড়েছে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে শহরের আদমপুর মাদ্রাসা ও এতিমখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে রোগটির প্রভাব বেশি হওয়ায় বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে জেলা সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, শহরের আদমপুর মাদ্রাসা ও এতিমখানায় হঠাৎ করে একই সঙ্গে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হয়। হলে বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠানটির ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া শহরের আলীপুরের অপর একটি মাদ্রাসায় মঙ্গলবার রাতে হেফজ বিভাগের ছাত্ররা কোরআন শিক্ষা নেয়ার সময় হঠাৎ করে একসঙ্গে ১৫ জন শিক্ষার্থী চোখে ব্যথা অনুভব করে। মুহূর্তের মধ্যে প্রত্যেকের চোখ পুরো লাল হয়ে যায়। এদিকে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে বুধবার সারাদিনে প্রায় সাড়ে তিনশো চোখ ওঠা রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। সদর উপজেলা ছাড়াও ৯টি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চোখ ওঠা রোগী বেড়েছে। এ ব্যাপারে সালমান ফারসি (রা.) মাদ্রাসা ও এতিমখানার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার দিনগত রাতে মাদ্রাসার ছাত্ররা কোরআন শিক্ষা নেয়ার সময় একসঙ্গে ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী চোখ ব্যথা শুরু হয় এবং চোখ পুরো লাল হয়ে যায়। এরপর তখনই তাদের নিরাপদ স্থানে পাঠানো হয়।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তানসিভ জুবায়ের বলেন, ফরিদপুর জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ে হঠাৎ চোখ ওঠা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। গত একদিনের ব্যবধানে পুরো জেলায় রোগীর সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। তবে কয়েক হাজার ছাড়িয়েছে। এ রোগের উপসর্গ সাধারণত তিন দিন পর্যন্ত থাকে। আক্রান্ত রোগীর অধিকাংশরা নিজেদের বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের কম আলোতে থাকার পাশাপাশি চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী চোখের ড্রপ ব্যবহারেরও পরামর্শ দেন তিনি।

সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, চোখ ওঠা রোগে কেউ আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আক্রান্ত রোগীদের নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। এটি ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে হয়ে থাকে। ছোঁয়াচে হওয়ায় সংক্রমণের হার বাড়ছে।