পঞ্চগড় প্রতিনিধি

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবে ২৪ জনের সলিলসমাধি

ছবি : সংগৃহীত

তারা যাচ্ছিলেন স্থানীয় বরদ্বেশ্বরী মন্দিরে মহালয়ার ধর্মসভায় ঠকুরের বাণী ও ধর্ম-উপদেশ শুনতে। শেষে মন্দিরে পূজা অর্চনা করে ভগবানের কাছে চাইবেন জীবনের শান্তি ও সমৃদ্ধি। কিন্তু ওদের এই পুণ্য অর্জনের শুভযাত্রায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকা ডুবে ২৪ জনের সলিলসমাধি হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এ ঘটনায় নিখোঁজ আছেন বেশ কয়েকজন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে বোদা উপজেলার মারেয়া আউলিয়া-বরদ্বেশ্বরী ঘাটে করতোয়া নদীতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোলায়মান আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, দুপুরে করতোয়া নদীর মাঝখানে শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে যায়। যাত্রীদের বেশিরভাগই মহালয়ার পূণ্যার্থী ছিলেন। তারা নদীর ওপারে বরদ্বেশ্বরী মন্দিরে প্রার্থনা শেষে ফিরছিলেন।

রবিবার সন্ধ্যায় জানা গেছে, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে নারী ও শিশুসহ ২৪ জন মারা গেছে। নিখোঁজ রয়েছে অর্ধশত। মৃতের সংখা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার কর্মীরা। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও নারী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহত সদস্যের প্রতিটি পরিবারকে লাশ সৎকারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হচ্ছে।

এদিকে বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদে জরুরি তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে ০১৭০৮-৩৯৭৭১৮ ও ০১৭১৯-৩৪৭১৭৩ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নদীর অপরপাড়ে মহালয়া উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো বরদ্বেশ্বরী মন্দিরে ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রবিবার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে নিহতরা নৌকায় নদী পার হচ্ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতার জানায় তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম জানান, করতোয়ার পাড়ে শিশু ও নারীসহ ২৪ জনের লাশ দেখেছেন। তিনি আরো জানান, দুই দিন ধরে পঞ্চগড়ে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে বেশি পানি ও নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করার কারণে এত বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামসহ জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধার কাজ পর্যবেক্ষণ করেছেন।

স্বজনদের আহাজারিতে সেই নদীর পারে চলছে শোকের মাতম।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পঞ্চগড়,নৌকা ডুবে,সলিলসমাধি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close