নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের অবৈধ লিজ বাতিল দাবি

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের অবৈধ লিজ বাতিলের দাবি জানিয়েছে লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি। তারা বলেছে, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ভূমি বেদখল বন্ধ করতে হবে এবং ম্রো ও ত্রিপুরাদের ভোগ দখলীয় ৪০০ একর জুম ভূমিসহ কোম্পানি কর্তৃক বেদখলকৃত সব জমি ফেরত দিতে হবে।

‘লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ ও আমাদের ভূমি রক্ষার লড়াই’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি করা হয়। বুধবার ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হল রুমে ‘লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি’ এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

গোলটেবিল বৈঠকে লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক, রংধজন ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, গবেষক ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও চট্টগ্রামস্থ সচেতন নাগরিক সমাজের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সভাপতি হাসিবুর রহমান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ডা. ফয়জুল হাকিম (লালা), বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চার সভাপতি জাফর হোসেন, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত প্রমুখ।

এতে সভা সঞ্চালনা করেন লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্য মথি ত্রিপুরা এবং সভার প্রারম্ভে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লামা সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সদস্য ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী যোহন ম্রো।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহকে জাতি হিসেবে এখনো স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহের ওপরে নিপীড়ন নির্যাতন, সম্পত্তি-জমি বেদখল করার জন্য পুরো অঞ্চলে সামরিকায়ন করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের পরবর্তীতে ’৮০ দশকে সমতল থেকে ৪ লাখের অধিক বহিরাগত সেটলার বাঙালিদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছিল। তাদের রাজনৈতিকভাবে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সে কারণে সেখানে প্রায় সময় জাতিগত সংঘাত জিয়ে রেখে সুফল ভোগ করছে। কারা সুফল ভোগ করছে তার একটি মাত্র চিত্র এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে। সেখানে পাহাড়ের পর পাহাড় সামরিক, বেসামরিক আমলা ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা নামে-বেনামে হাজার হাজার ভূমি বেদখল করে আছে। প্রচলিত আইনকে ব্যবহার করে পাহাড়িদের প্রথাগত আইনকানুনকে উপেক্ষা করে মুনাফালোভীরা সেখানকার জাতিসত্তাসমূহকে অস্বীকার করে, ভূমির ওপর খবরদারি করে দখল করে বসে আছে। এই মুনাফালোভীদের রক্ষার জন্য সেখানে শান্তি রক্ষার নামে ব্যাপক সামরিকীকরণ করা হয়েছে। প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে পাঁচতারকা হোটেল নির্মাণ, রিসোর্ট নির্মাণ করে বিশাল বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বিগত ৯ এপ্রিল ২০২২ লামা সরই ইউনিয়নের ৩০৩নং ডলুছড়ি মৌজায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক ত্রিপুরা ও ম্রোদের ফলদ চারা, আনারস চারা, আমগাছ, জামগাছ, কাঁঠালগাছ, কলাগাছ, বাঁশ ও গাছ বাগানসহ ইত্যাদি কেটে সাবাড় করে এবং ২৬ এপ্রিল তা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ভূমি রক্ষা কমিটির নেতারা ও গ্রামবাসীদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, হামলা, ঝিরির পানির উৎসে বিষ প্রয়োগসহ সব ধরনের অপচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
লামা,লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ,অবৈধ লিজ বাতিল দাবি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close