মো. আবু সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আমতলীর ৭ ইউনিয়নে ৩০ সড়ক বেহাল

বরগুনার আমতলী উপজেলায় একটি বেহাল সড়ক। ছবি বুধবার তোলা - প্রতিদিনের সংবাদ

বরগুনার আমতলী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্ন সময়ে নির্মিত ৩০টি আঞ্চলিক সড়ক সংস্কারের অভাবে বড় বড় গর্তে ভরে গেছে। গর্তে বর্ষার পানি জমে বেহাল হয়েছে। অধিকাংশ সড়কের কার্পেটিং উঠে গর্ত হওয়ায় তাতে বৃষ্টির পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগী স্থানীয় জনগণ।

আমতলী উপজেলার স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) কার্যালয় ও স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে ৩০টি সড়কের চিত্র জানা গেছে। এর মধ্যে উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের খেকুয়ানি বাজার থেকে গুলিশাখালী বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক। সড়কটির কার্পেটিং দুই বছর আগে উঠে যায়। এরপর সড়কটির অবস্থা করুণ হয়ে দাঁড়ায়। সড়কের অধিকাংশ জায়গায় খোয়া সরে যাওয়ায় বর্ষার পানি জমে অনেক জায়গায় কাদার সৃষ্টি হয়েছে।

এ সড়কের কেখুযানি বাজারের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সড়ক জুড়ে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বর্ষার সময় সবসময় পানি জমে থাকে। এতে বাজারে যাতায়াতে মানুষজনকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

একই ইউনিয়নের গুলি শাখালী বাজার থেকে গোছখালী ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। সড়কটির কার্পেটিং উঠে হাজারো গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় মানুষ এবং যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কুকুয়া ইউনিয়নের মহিষকাটা স্ট্যান্ড থেকে চরখালী সড়কটি ২ বছর পূর্বে নির্মাণ করে কার্পেটিং করা হয়।

দুই বছরের মাথায় সড়কটির অধিকাংশ জায়গার কার্পেটিং উঠে শত শত গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় মানুষ পড়েছেন মহা ভোগান্তিতে। হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গুরুদল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ কাদের মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ।

সড়কটি ২০১২ সালে নির্মাণের পর আর কোন সংস্কার না করায় সম্পূর্ণ কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় মানুষ এবং যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমতলী সদর ইউনিয়নের ছুরিকাটা মোর থেকে মহিষডাঙ্গা সেতু পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সড়কটি সংস্কারের অভাবে কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় অনেক জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা তাদের চলাচলের জন্য ইটের টুকরো ফেলে সড়কটিতে কোন রকম চলাচল অব্যাহত রেখেছে। আমতলী সদর ইউনিয়নের খেয়াঘাট থেকে নোমর হাট হয়ে হলদিয়া ইউনিয়নের অফিস বাজারের সাথে সংযুক্ত সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। সড়কটি হলদিয়া এবং সদর ইউনিয়নের যোগাযোগ রক্ষাকারী একমাত্র সড়ক।

এই সড়কটির অধিকাংশ জায়গার কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় অনেক ভোগান্তি নিয়ে মানুষ এবং যানবাহন চলাচল করছে। আমতলী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানা লোদা সেতু থেকে হলদিয়া সেতু পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক বেহাল। এই সড়কটির কার্পেটিং উঠে অনেক যায়গায় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বর্ষার পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা সড়কটির অনেক জায়গায় ইটের খোয়া ফেলে চলাচল করছে। চাওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া বাঁধ থেকে কাউনিয়া গ্রামের কালাম মিস্ত্রী বাড়ি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক বেহাল। সড়কটির কার্পেটিং উঠে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

চাওড়া ইউনিয়নের মানিক গাজির বাড়ি থেকে চালিতা বুনিয়া হয়ে কালিবাড়ি পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। সড়কটি আমতলী পৌরসভার সাথে সংযুক্ত। এই সড়কটির কার্পেটিং উঠে খোয়া বের হয়ে যাওয়ায় সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

হলদিয়া সেতু থেকে চন্দ্রা হয়ে তালুকদার বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়কটিও বেহাল। আমতলী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের মাজার থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কটিরও একই অবস্থা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রাম, খেকুয়ানি বাজার, গোছখালী, খেয়াঘাট, ছুরিকাটা, কাউনিয়া চুনাখালী, চালিতাবুনিয়া, কাউনিয়া-লোদা, লোছা, চন্দ্রা, এ, কে স্কুল, তালুকদার হাট সড়ক, হলদিয়া জুলেখার সড়ক, দফাদার সড়ক, খেয়াঘাট-হলদিয়া ইউপি কমপ্লেক্স সড়ক, চুনাখালী সড়ক, চরখালী সড়ক, খেকুয়ানি সড়ক, গুলিশাখালী সড়ক, আঠারগাছিয়া হাজার টাকার বাঁধ সড়ক, খেয়াঘাট-তারিকাটা সড়ক, আরপাঙ্গাশিয়া বাজার-পূর্বতারিকাটা সড়ক, আরপাঙ্গাশিয়া-ঘোপখালী সড়ক, গাজীপুর কাঠালিয়া সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের খুবই খারাপ অবস্থা। খেকুয়ানি, ছুরিকাটা, গোছখালি সড়কে এত সংখ্যক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে যে, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের গর্তে পানি জমে যায়। এর ফলে মানুষজন মহাভোগান্তি সয়ে চলাচল করেন।

খেকুয়ানি গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস ছোবাহান লিটন বলেন, খেকুয়ানি গুলিশাখালী সড়কটির খুবই খারাপ অবস্থা। এর মধ্যে খেকুয়ানি বাজের অবস্থা খুবই করুন। বর্ষার সময় এখান দিয়ে কোন মানুষ চলাচল করতে পারে না। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।

আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সড়কগুলো মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। টাকা পাওয়া গেলে শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু করা হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আমতলী,৭ ইউনিয়ন,৩০ সড়ক বেহাল
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close