মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

  ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমি ও কোয়ার্টার দখল, বিক্রি

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের কারণে রেল বিভাগের পতিত জমি ও কোয়ার্টার দখল এবং বিক্রয়ের ধুম পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দখলদারদের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করায় এ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও কোন ফল মিলছে না।

রেলওয়ের পক্ষ থেকেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এর ফলে প্রায় প্রকাশ্যেই চলছে রেলের জমি ও কোয়ার্টার দখল।

১৮৭০ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের বিশাল কারখানা স্থাপিত হয় নীলফামারীর সৈয়দপুরে। ওই সময় রেল বিভাগ প্রায় সাড়ে ৮ শত একর ভূ-সম্পত্তি হুকুম দখল করে নেয়। রেলের বিশাল কারখানা স্থাপনের কারণেই নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ের শহরে পরিনত হয়। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিন ভাগ জমি ও ১ হাজার ৬শ কোয়ার্টার দখলদারদের দখলে চলে যায়। ২০১৮ সালে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দপুরে যোগদান করার পর রেলের কোন জমি বা কোয়ার্টার কোন দখলকারী দখল করতে পারেনি। প্রায় ২ বছর বন্ধ থাকে রেলের জমি ও কোয়াটার দখল ও বিক্রয় বা দখল হয়ে যাওয়া জমিতে স্থাপনা নির্মাণ কাজ। কিন্তু তাকে সু-কৌশলে অনত্র বদলি করে দেওয়া হয়। এরপর ২০২১ সালে শরিফুল ইসলাম নামের এক কর্মকর্তা ওই অফিসে যোগদানের পর আবারো শুরু হয়ে যায় দখলদারদের সাবেক কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে সৈয়দপুর শহরের মদ ভাটি সংলগ্ন ভাগার নামক এলাকায় শামিম নামের এক ব্যক্তি প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জমিতে বিশাল বড় গোডাউন নির্মাণ কাজ করে চলেছেন। ওই ব্যক্তির অবৈধভাবে গোডাউন নির্মাণের ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী বরাবরে অভিযোগ দিয়েও দৃশ্যমান কোন ফল মেলেনি।

এ ব্যাপারে রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দখলদার শামিমের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, স্থানীয় রেল কর্মকর্তার সাথে কথা বলেই নির্মাণ কাজ অব্যহত রেখেছি। রেল কর্মকর্তার সাথে কথা না হলে রেলের জমি দখল বা স্থাপনা নির্মাণ কোন ক্রমেই সম্ভব নয়।

রেলওয়ের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে লাঠি দিয়ে ভূত তাড়ানো সম্ভব সেখানেই যদি ভূত থাকে তাহলে ভূত তাড়ানো অসম্ভব। ১৯৯৬ সালের পর যারা অবসরে গেছেন তাদের বরাদ্দকৃত কোয়ার্টারগুলোর বরাদ্দ বাতিল করে রেলওয়ের নিজ আয়ত্তে নেয়ার কথা। কিন্তু রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সেগুলি কাগজ কলমে দখলে থাকার কথা বলে শতাধিক কোয়ার্টার দখলদারদের কাছে অর্থের বিনিময়ে হস্তান্তর করেছেন।

তারা আরও বলেন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সৈয়দপুর রেলওয়ে উন্নয়নে প্রায় ৩ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছে। বরাদ্দকৃত ওই অর্থের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ পর্যবেক্ষণ করার কথা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলীর। কিন্তু তারা মাসে একবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শণ ও পর্যবেক্ষণ করেননি। এর ফলে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজ চলছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসব উন্নয়ন কাজে শিডিউল ও প্রাক্কলন নিয়ে তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম কোন কথা বলবেন না বলে জানান।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সৈয়দপুর,রেলওয়ের জমি,কোয়ার্টার দখল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close