আব্দুর রহমান রাসেল, রংপুর

  ৩০ আগস্ট, ২০২২

রংপুরে সংকটে সোনালি আঁশ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

রংপুরে এ বছরে কৃষি অঞ্চলে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৫৮ হাজার ১২৪ হেক্টর জমি ধরা হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে ৫১ হাজার ৬২৭ হেক্টর জমি। পাট চাষে নেই আশানুরূপ ফল। বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে না প্রকৃত দাম। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন চাষিরা।

জানা গেছে, শ্রমিকের চড়া মূল্য, সার ও পরিচর্যায় এবার বিঘাপ্রতি অতিরিক্ত খরচ হয়েছে ১ থেকে ৩ হাজার টাকা। অন্যদিকে অনাবৃষ্টির কারণে পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় ফলনও যথাযথ হয়নি। পাট কেটে পচানোর ক্ষেত্রেও পানির অভাবে ভোগান্তি হয়েছে চাষিদের।

সরেজমিনে এ অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষক পানির অভাবে পাটের জাগ দিতে পারছে না। বর্ষাকালে খাল-বিল, নদী-নালা বৃষ্টির পানিতে ভরে যায়। কিন্তু এবার বর্ষায় কাক্সিক্ষত বৃষ্টি হয়নি। তাই বিপাকে পড়তে হয়েছে চাষিদের। পাট কাটার পর পচানোর জন্য গাড়িতে করে জলাশয়ে নিতে হয়েছে অনেককে। অনেক কৃষককে বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন বা মোটরে পানি তুলে পাট জাগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ করতে হয়েছে।

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের গাবুড়া গ্রামের নুর হোসেন বলেন, ‘ভাই গো, আমরা কৃষক মানুষ। কৃষি আবাদ করে চলে হামার সংসার। আমি মানুষের জমি বর্গা নিয়ে ৫০ শতাংশ জমিতে পাট লাগাইছি। পানির অভাবে জাগ (পচা) দিতে পারছি না। কী করব তাই চিন্তাই আছি।’ স্থানীয়রা বলছেন, এ বছর বৃষ্টির পানি নেই। পাট বীজ জমিতে বোনা থেকে শুরু করে কাটা, ধুয়ে বাজারে বিক্রি করা পর্যন্ত গতবারের তুলনায় এবার খরচ অনেক বেশি।

চাষি আমজাদ হোসেন বলেন, ‘পাট কাটতে পারছি না। পাট কাটলে তো পানিতে পচাতে হবে। আমরা যে খালে পাট পচাই সে খালে পানি নাই। যদি পানি হয় তাহলে পাট পচাতে পারব। না হলে কেটে খড়ি করতে হবে।’

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান ম-ল জানান, উন্নত মানের বীজ সংকট কাটাতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। অনাবৃষ্টিতে পাট জাগানোর দুশ্চিন্তা এড়াতে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ বছর জেলায় ৯ হাজার ২৫৬ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে পাট ঘরে তুলতে বেশি টাকা ব্যয় হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ন্যায্যমূল্য পেলে এই লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবেন।

বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের রংপুর আঞ্চলিক কর্মকর্তা আবু ফজল মোল্লা বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে সঠিকভাবে কৃষকরা পাট পচাতে পারছেন না। এটা একটা সংকট। তাদের বৈজ্ঞানিক উপায়ে পাট পচিয়ে আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রংপুর,সোনালি আঁশ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close