জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

  ২২ আগস্ট, ২০২২

দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি দাবি

হবিগঞ্জে কাজে ফেরেনি ২৩ চা-বাগানের শ্রমিক

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

মজুরি বৃদ্ধির দাবি আদায়ে অনড় রয়েছে হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালির ২৩টি চা বাগানের শ্রমিক। সোমবার (২২ আগস্ট) সকালেও বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা চুনারুঘাটের চান্দপুর বাগানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরি ছাড়া কাজে ফিরবেন না বলে জানান। একই সঙ্গে ১৪৫ টাকা মজুরিতে কাজে যোগ দেয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন তারা।

ভ্যালির শ্রমিক নেতারা বলছেন, কাজে ফেরার জন্য তারা এখনও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা পাননি। এ ছাড়া ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের চা শ্রমিকরা কাজে ফিরলেও তারা ফিরবেন না। রাতের আঁধারে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ১৪৫ টাকা মজুরিতে যে স্বাক্ষর করেছেন, সেটি তারা মানেন না বলেও জানান।

চান্দপুর চা বাগানের শ্রমিক বীরেন তন্তুবায় বলেন, ৩০০ টাকা মজুরির জন্য আমরা আজকে ১৪ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছি। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন ১৪৫ টাকায় কাজে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

চান্দপুর চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সাধন সাওতাল বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি কাজে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়নি। তারা যদি প্যাডের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে কাজে যাওয়ার নির্দশনা দেয় তাহলে আমরা কাজে যাব, তবে অবশ্যই ৩০০ টাকা মজুরি নিয়ে। এর কমে হলে আমরা কাজে যাব না।

বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খায়রুন আক্তার বলেন, ‘আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা রাতের আঁধারে গিয়ে হাত মিলিয়েছে। তাতেও লাভ হবে না। ৩০০ টাকা মজুরি ছাড়া কোনো শ্রমিক কাজে ফিরবে না। নেতারা রাতে চোরের মতো স্বাক্ষর করে এসেছে। আমরা সেসব নেতাকে ধিক্কার জানাই। তাদের পেলে গণপিটুনি দেব।’

এর আগে রবিবার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শ্রমিকরা। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে দুই দিনের আলটিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন। আলটিমেটাম অনুযায়ী সোমবার ও মঙ্গলবার শ্রমিকরা কোনো ধরনের আন্দোলন-সংগ্রাম না করে নিজ নিজ বাগানে অবস্থান করবেন। ২৩ আগস্টের ভেতর দাবি আদায় না হলে ২৪ তারিখ আবারও তারা রাস্তায় নামবেন বলে জানান।

তবে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আগের ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে ফিরছেন মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকরা। সোমবার থেকেই তারা কাজে যোগ দিয়েছে বলে জানা গেছে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে রবিবার রাতে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি বলেন, আপাতত পূর্বের মজুরিতেই কাজে যোগ দেব, তবে দ্রুততম সময়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলাপ করে নতুন মজুরি নির্ধারণ করবেন। আর ধর্মঘট চলাকালীন ১০ দিনের মজুরিসহ সব সুবিধাদি মালিকপক্ষ প্রদান করবে।

এদিকে, সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে চান্দপুর চা-বাগানে যান হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান। সেখানে গিয়ে তিনি শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য অনুরোধ করলেও তারা শুনেনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চা-বাগানের শ্রমিক,হবিগঞ্জ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close