গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ১৬ আগস্ট, ২০২২

সিরাজগঞ্জে যমুনার ভাঙন 

স্রোতে ভেসে গেছে নদী তীরে ফেলা জিও ব্যাগ 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনার ভাঙন রোধে নদী তীরে ফেলা জিও ব্যাগ পানির তোরে ভেসে গেছে। আর এতেই ভিটেমাটি হারাচ্ছে নদী পারের অসহায় মানুষ। উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম-পাঁচিল ও গালা ইউনিয়নের মাজ্জান-বিনোটিয়া এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। অপরদিকে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে কৈজুড়ীর মনাকোশা পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ বাঁধ ৬৪৫ কোটি টাকার কাজ চলতি বছর থেকে শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে ১৯টি প্যাকেজের আওতায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ কাজে ত্রুটি থাকায় জিও ব্যাগ গুলো পানির স্রোতে ভেসে গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, সমপ্রতি সেইসব জিও ব্যাগ ভেসে যাওয়ায় ব্রাহ্মণগ্রাম, আড়কান্দি, মনাকোষা গ্রাম এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বস্তায় বালু কম দেওয়া, প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যক বস্তা ফেলা, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় স্থানে বস্তা না ফেলা। এসব কারণে বস্তা ফেলা হলেও সামান্য স্রোতেই কয়েকদিন পর তা ধসে গিয়ে ভাঙছে নদী তীর। ভিটেমাটি হারাচ্ছে নদী পারের মানুষ।

ব্রাহ্মণগ্রামের আনোয়ার সরকার, শামছুল ভূঁইয়া ও ইয়াকুব আলী জানান, বর্ষা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে যমুনা নদীর পশ্চিম তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ভাঙনের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, ঘাটাবাড়ি, জালালপুর, পাকরতলা, ভেকা, হাটপাঁচিল, শরিফ মোড়, মাজ্জান, ফকিরপাড়া ও বিনোটিয়া গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

তারা আরো জানান, ভাঙনে মাজ্জান, ফকিরপাড়া ও বিনোটিয়া এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ধসে গেছে। জগতলা ও মাজ্জান এলাকায় যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। অপরদিকে ভাঙন কবলিত এলাকায় জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে। ঠিকাদারের লোকজন সঠিক ভাবে কাজ না করায় এ ব্যাগ ফেলা কোন কাজেই আসছে না। এসব ব্যাগ ফেলার কয়েকদিন পরেই সামান্য স্রোতেই ওই বস্তা গুলো ধসে সেখানে ভাঙন দেখা দিচ্ছে বলে জানান তারা।

৫ নম্বর এলাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাজওয়া ট্রেড সিস্টেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. রুবেল বলেন, ‘আমরা প্রথমত জিও বস্তা বালু ভর্তি করি। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাস্কফোর্স কমিটি দেখে নিশ্চিত করার পর ওই বস্তাগুলো নদীতে ফেলা হয়। আমাদের কাজে কোন অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে না।’

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন জানান, ব্রাহ্মণগ্রাম এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। কিন্তু জিও ব্যাগ ফেলতে কোন অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে না। যতই ভালো কাজ করা হয় না কেন, যখন ভাঙন শুরু হয় তখন ওই এলাকার মানুষ অভিযোগ দিবে এটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, জিও ব্যাগে বালু ভরার পর ঢাকা থেকে টাস্কফোর্স কমিটির একজন সদস্য এসে বালুভর্তি জিও ব্যাগের গুণগতমান নিশ্চিত করেন। এরপর সেই বস্তা নদীতে ফেলা হয়। তারপরও যদি কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
যমুনার ভাঙন,সিরাজগঞ্জ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close