গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে পাট খড়ির নানাবিধ ব্যাবহারে লাভবান কৃষক

সিরাজগঞ্জে পাট খড়ির কদর বেড়েই চলেছে। আগে এই পাট খড়ি শুধু জ্বালানী হিসাবে ব্যাবহার করা হলেও বর্তমানে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির কারণে অনেক ক্ষেত্রে পাটখড়ির ব্যবহার বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় জ্বালানি, পার্টিকেল বোর্ড মিলে, হস্তশিল্পজাত বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে। এ জেলার কৃষকরা পাট বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে পাট খড়ি বিক্রী করেও বেশ লাভবান হচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, রোদে পাটখড়ি ভালভাবে শুকানোর পর ব্যাবসায়ীরা বাড়ি খেকে কিনে নিয়ে যায়। এই পাটখড়ি তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ ভ্যানে করে বিক্রী করে থাকে। পাট খড়ির চাহিদা বাড়ার সঙ্গে এর দামও বেশ ভালো ফলে পাট চাষিরা লাভবান হচ্ছে। পাট খাড় বিক্রী করেই তারা পাট চাষের খরচ তুলতে পারে আবার কখনও খরচের চেয়ে বেশি টাকাতেও বিক্রী হয়। এক সময় সবজি খেতের বেড়া, মাচা, পানের বরজ, বিভিন্ন হস্তশিল্প পণ্য তৈরির কাজে পাটখড়ির নব্যাবহার হতো। এখন ব্যাপক হারে পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে এসব।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ টি উপজেলায় এ বছর ১৬,৮৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১২,৩৬৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে তোষা পাট ১১,৭৭০ হেক্টর মেস্তা পাট ৫৩৫ হেক্টর দেশি পাট ১০৫০ হেক্টর, ও কেনাপ পাট ৩,৩৮৫ হেক্টর।
সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি গ্রামের পাট চাষি আবু ইউসুফ জানান, এক বিঘা জমির পাট থেকে যে পাটখড়ি পেয়েছি তা শুকিয়ে পরিস্কার করে বিক্রি করতে পারলে ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রী করা যাবে। জারিলা গ্রামের পাট চাষি আহসান আলী জানান, পাঠ খড়ির চাহিদা ভালো থাকায় বেশ ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাবসায়ীরা গ্রাম এলাকা থেকে কিনে শহরে ভালো দামে বিক্রী করে লাভবান হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, এ জেলায় পাটের ভালো ফলন হয়েছে। উৎপন্ন পাটের গুনগত মান ভালো হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপী। পাশাপাশি পাটখড়িও দেশের বিভিন্ন পার্টিকেল বোর্ড মিলসহ বিভিন্ন হস্ত শিল্পে ব্যাবহার হয়। তাছাড়াও পাট খড়ির ছাই কম্পিউটারের কালি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে কৃষকরা আর্থিক দিক দিয়ে আরও লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।