এম এ সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ১১ আগস্ট, ২০২২

জোয়ার-ভাটার সঙ্গে যুদ্ধ করে যেখানে পথ চলা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

বরগুনার আমতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গাজীপুর বন্দর বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে একাকার হয়ে ভাসছে। এখানে বেড়িবাধ না থাকায় দুটি নদীর জোয়ারের পানি কূল ছাপিয়ে যায়। এ জন্য পূর্নিমা ও অমাবশ্যায় জোয়ার-ভাটার সাথে যুদ্ধ করে চলতে হয় গাজীপুর এলাকাবাসীর।

গাজীপুরের বাসিন্দারা জানান, বছরের পর বছর ধরে এই দশা তাদের। জোয়ারের পানিয়ে তলিয়ে যায় গাজীপুর নদী বন্দর। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, তাদের এই জোয়ার-ভাটার দুঃখ-দুর্দশা দেখার কেউ নেই। গাজীপুর বন্দরকে রক্ষায় দ্রুত শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৮ সালে আমতলী ও গলাচিপা উপজেলার সীমান্তবর্তী বড় গাবুয়া ও সোনাখালী নদীর মোহনায় গড়ে উঠেছে গাজীপুর নদী বন্দর। এই বন্দরে কয়েকশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সপ্তাহে বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিন হাট বসে। ব্রিটিশ আমল থেকেই এলাকায় এটি ব্যবসা বাণিজ্যের বড় একটি মোকাম হিসেবে পরিচিত। এই বন্দর ও মোকাম ঘিরে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। কিন্তু বর্ষা, বন্যা ও জোয়ার ভাটায় এলাকাটি পানির নিচে চলে যায়। এতে এলাকার মানুষ খুব ভোগান্তিতে পড়েন। কিন্তু শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হয়নি আজও। জোয়ারের পানিতে এই শহর ভেসে যায় এবং ভাটায় শুকায়।

তিন দিকে দুটি নদী বেষ্টিত বন্দর গাজীপুর। বুধবার (১০ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুই নদীর জোয়ারের পানিতে পুরো বন্দর ডুবে গেছে। বন্দরের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসত বাড়ী পানিতে তলিয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখেছেন। মধ্য জোয়ার থেকে ভাটার আগ পর্যন্ত তাদের ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকে। তবে শুকনো মৌসুমে এমন সমস্যা হয় না। বর্ষা মৌসুমে তাদের চলে দুর্বিসহ জীবন।

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুল বাতেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন বন্দর এলাকা ও মোকাম জোয়ারে ভাসছে এবং ভাটায় শুকাচ্ছে। জোয়ার-ভাটার সাথে লড়াই করেই ব্যবসা ও বসবাস করতে হয়। এই পুরাতন বন্দরটি রক্ষায় শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবী জানাই।

আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, ঐহিত্যবাহী গাজীপুর বন্দরকে রক্ষায় শহর রক্ষা বাঁধ প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাই।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর বন্দরকে রক্ষায় শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের আওতায় এনে প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদের মুঠোফোন নম্বরে কয়েকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. মজিবুর রহমান বলেন, গাজীপুর বন্দরের শত শত মানুষ ও ব্যবসায়ীর দুঃখ দুর্দশা লাঘবে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। দ্রুত এ বন্দরটি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানাই।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বরগুনা,আমতলী,জোয়ার-ভাটা,গাজীপুর বন্দর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close