মজিবুর রহমান খান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

  ০৭ আগস্ট, ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাল সংগ্রহে লক্ষ্য পূরণের আশা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি চাল সংগ্রহে এবার লক্ষ্য পূরণের আশা করা হচ্ছে। চালের বাজার চড়া থাকায় গত দু-মৌসুমে সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি। তবে এবার দাম কমায় মিল মালিকরা চাল সরবরাহে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ জেলা থেকে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৮৯৫ টন। অতিরিক্ত ২১৭২ টনসহ সিদ্ধ চালের মোট বরাদ্দ ৪৩ হাজার ২৩ টন। আর আতপের বরাদ্দ অতিরিক্ত ১৬০৬ টনসহ ৮ হাজার ৬৬২ টন। এরমধ্যে আশুগঞ্জ উপজেলায় ৩১ হাজার ২২ টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৬ মে থেকে চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে জেলায়। এ সময় ধানের দাম বেশি থাকায় চুক্তিবদ্ধ ২৬৮ জন মিল মালিক ধীরগতিতে চাল সরবরাহ করতে থাকেন। ফলে আড়াই মাসের বেশি সময়ে পুরো জেলায় ৩৫ হাজার ৮১৩ টন চাল সংগ্রহ হয়। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৭৪ দশমিক ৪৩ ভাগ। খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা ছিলো এ সময়ের মধ্যে ৯০ ভাগ চাল সংগ্রহের।

মিল মালিকরা জানিয়েছেন, সরকারি ভাবে চাল আমদানির খবরে এখানে প্রতিমণ ধান ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং চালের ৫০ কেজি বস্তার মূল্য ১০০ টাকা কমেছে। মোটা জাতের ধান প্রতিমণ ৯০০ থেকে ৯২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে মোটা ধান থেকে উৎপাদিত চালের খরচ আগের তুলনায় ১-২ টাকা কমে ৩৮-৩৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ফলে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে তারা তৎপর হয়ে উঠেছেন। এরআগে ২০২০ এবং ২০২১ সালে জেলায় আমন ও বোরো সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি।

এদিকে জেলার খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় সংগ্রহকৃত চালের মধ্যে ২৬ হাজার ৪৩৪ টন চাল চট্টগ্রাম বিভাগের ২টি সিএসডিসহ বিভিন্ন জেলার গুদামে পাঠানো হয়েছে। এ জেলার ১০টি খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা ২১ হাজার ৫০০ টন। জেলার বাইরের গুদামে পাঠানো চালের গুনগত মান ভালো হওয়ায় মিল মালিকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে প্রায় ৪ হাজার টন অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হয়। স্থানীয় খাদ্য অধিদপ্তর আশুগঞ্জের একটি সিদ্ধ অটোমেটিক মিলের জন্যে ৫০০ টন এবং ৫০টি আতপ মিলের জন্যে ৩৫০০ টন চাল বরাদ্দের আরো একটি চাহিদাপত্র চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠিয়েছে।

জেলা চালকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি জিয়াউল করিম খান সাজু এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক বায়দুল্লাহ বলেন, গুদামের ধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় আশুগঞ্জে আমাদের সরবরাহকৃত চালের মধ্যে ১৭ হাজার ৪০০ টন চাল চট্টগ্রাম বিভাগের হালিশহর সিএসডি ও দেওয়ানহাট সিএসডিসহ ফেনী ও চাঁদপুরের বিভিন্ন গুদামে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে এসব খাদ্য গুদাম পরির্দশন করে আশুগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে পাঠানো চাল দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সরকার নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা চালের উৎপাদন মূল্য বেশি। তারপরও এখানকার মিল মালিকরা লোকসান দিয়ে চালের গুনগত মান বজায় রেখে গুদামে চাল সরবরাহ করছেন।

জেলা চালকল মালিক সমিতির বর্তমান সভাপতি বাবুল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া (স্বপন) জানান, আশুগঞ্জের চালের গুণগত মান অন্যান্য জেলার চেয়ে ভালো বলে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে অতিরিক্ত ৪ হাজার টন বরাদ্দ দেওয়া হয়।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া মোস্তফা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিটি খাদ্য গুদামে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান আছে। জেলায় সংগৃহিত চালের গুণগতমান পাশ্ববর্তী সকল জেলা থেকে ভালো হওয়ার প্রেক্ষিতেই এ জেলায় অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চাল,সরকারি চাল
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close