সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

  ০৫ আগস্ট, ২০২২

সৈয়দপুর বালিকা আদর্শ বিদ্যালয় ও কলেজ ভবনঘেষে বহুতল ভবন নির্মাণ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নীলফামারীর সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের তিনতলা ভবন ঘেষে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। পৌরসভা এলাকায় স্থাপনা নির্মাণের যে নীতিমালা রয়েছে তা মানা হয়নি। এমনই অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান। তবে পৌরসভার অনুমোদন নিয়ে নিয়ম মতই কাজ করছে বলে জানান ওই ভবনের মালিক আবুল কাশেম।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, কলেজের মূল ভবনের পাশে উত্তর দিকে আব্দুল ওয়াদুদ টেনিয়া নামের এক ব্যক্তির ৫ শতক জমি রয়েছে। এরপরই রেলওয়ের ২ শতক পতিত জমি, পৌরসভার বড় ড্রেন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টগামী সড়ক। দীর্ঘ দিন থেকে টেনিয়ার ওই জমিটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য বলা সত্ত্বেও তিনি দেননি। এতে আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক এমপি ও পৌর মেয়র অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন সরকার ওই ৫ শতকের পরিবর্তে দক্ষিণ দিকে (স্কুলের পেছনে) ১০ শতক জমি বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও টেনিয়া সম্মত হননি। বরং ওই জমিটি তিনি তার মেয়ে ও জামাতাকে হেবা দলিল করে দিয়ে ওইখানে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদনের আবেদন করেন। আমজাদ হোসেন সরকার জীবিত থাকতে টেনিয়া ওই অনুমোদন নিতে পারেনি। কিন্তু ২০২১ সালে তিনি মারা যাওয়ার পরে, প্যানেল মেয়র জিয়াউল হক জিয়ার স্বাক্ষরে নকশাটি অনুমোদন নিয়ে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বিষয়টি তৎকালীন সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিনকে অবগত করলে তাঁর পরামর্শে পৌর ও উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়।

অধ্যক্ষ আরো বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মানোয়ার হোসেন হায়দার আমাদের বর্তমান প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। তিনি নিষেধ করা সত্ত্বেও ওই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আমি সকল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানালেও সহযোগীতা পাইনি। বিষয়টি ইউওনও কে জানালে তিনি ওই স্থাপনার মালিক টেনিয়ার জামাতা আবুল কাশেমকে কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেন। তাই এখন কাজ বন্ধ আছে। একটি প্রতিষ্ঠান ঘেষে বহুতল ভবন করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে পড়েছে।

এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, প্রশাসন এই সমস্যার সমাধান না করলে আমরা প্রয়োজনে আন্দোলন করবো। তবুও অবৈধ কাজ বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।

মো. আব্দুল ওয়াদুদ টেনিয়া বলেন, জামাই আর মেয়েকে ৫ শতক জমি ভাগ করে দান করেছি। স্কুলের হর্তাকর্তাদের ঢিলেমির কারণেই তারা জমিটা নিতে পারেনি। তবে এখন পৌরসভা অনুমোদন দিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর আমাদের পক্ষে।

টেনিয়ার জামাতা আবুল কাশেম বলেন, পৌরসভার অনুমোদন নিয়ে নিয়ম মতই কাজ করছি। আর রেলওয়ের জমিটা আমরা পাকশী থেকে ১১ বছর আগে লিজ নিয়েছি। দখলের অভিযোগ সঠিক নয়। কলেজ কর্তৃপক্ষকে অনেকবার জমিটা নিতে বলেছি, তারা নেয়নি। এখন নিয়ম মেনে নিজের জমিতে নিজে বাড়ি করছি।

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দার বলেন, সাবেক মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার মারা যাওয়ার সুযোগ নিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র জিয়াউল হক জিয়া নকশা অনুমোদন করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়েও এর বিরুদ্ধে জোরাল অবস্থান নেয়নি। নকশা অনুমোদনে কারসাজি বিষয়ে তদন্তপূর্বক তা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে এবং রেলওয়ের জায়গাটুকু প্রতিষ্ঠানের নামে লিজ নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সৈয়দপুর,কলেজ,ভবন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close