রংপুরের তারাগঞ্জে সামান্য বৃষ্টিতেই বাজারের সড়কে হাটু পানি জমে থাকে। তারাগঞ্জ নতুন চৌপথী বাস ষ্ট্যান্ড থেকে বাজারের অগ্রণী ব্যাংক মোড় পর্যন্ত ১ কিলোমিটারের এই রাস্তাটি পথচারীদের গলার কাঁটায় পরিনত হয়েছে। আবার যখন শুকনো থাকে তখন রাস্তায় বিছানো ইটগুলো ভেঙে যাওয়ার ফলে যে কোন যানবাহন নিয়ে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে যায়।

অটোভ্যানে অসুস্থ্য বয়স্ক মাকে নিয়ে বাজারের রাস্তাটি দিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন কেল্লাবাড়ী এলাকার আজগর হোসেন নামের এক ব্যক্তি। কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, ‘এই রাস্তা দেখির লোক হামার তারাগঞ্জোত কায়ও নাই। কতদিন থাকি রাস্তাটা এই ভাবে ভাঙ্গাচুড়া হয়া পড়ি আছে তাওং ভালো করে না কায়ও। মাক ধরি মুই মেডিকেলোত যাইম। ভ্যানোত চরি গেইলে গোটায় রাস্তাটাতে ঝাঁকি নাগে। মাথার মগোজ পর্যন্ত নড়ে। মাক ভ্যানোত বসে বুকোত নিয়া যাওচোং। আরও যে কতদিন হামাক এই কষ্ট ভোগ করির নাগবে।’

তারাগঞ্জ বাজারের লাইব্রেরি ব্যবসায়ী পলাশ রায় বলেন, দীর্ঘ দিন রাস্তাটি এভাবে পড়ে থাকার কারণে আমাদের ব্যবসায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে। ভাঙ্গাচুড়া রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল কম করে। রাস্তার পাশেই আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। মানুষ কম চলাচলের কারণে আমাদের ক্রেতাও কমে গেছে। রাস্তাটি সংস্কার হলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে।

বাজারের মূল রাস্তাটির পাশেই রয়েছে এ উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তারাগঞ্জ ও এ কামিল মাদ্রাসা, তারাগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তারাগঞ্জ ও এ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। রয়েছে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং, ডাচবাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং ও ব্যাংকের এটিএম বুথ। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি এভাবে অযত্নে পড়ে থাকার কারণে ব্যাংকে সেবা নিতে আসা সেবাগ্রহীতাদের বেকায়দায় পড়তে হয়। দারুণ কষ্ট ভোগ করতে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আসলাম জানান, সে পার্শ্ববর্তী উপজেলা কিশোরগঞ্জের বাহাগিলী থেকে তারাগঞ্জে পড়ার জন্য যায়। এ রাস্তাটিতে বর্ষাকালে ও শুকনো মৌসুমে সব সময়েই চলাচল করতে দারুণ কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য আহ্বান জানান এই শিক্ষার্থী।

জানতে চাইলে তারাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আহম্মেদ হায়দার জামান বলেন, রাস্তাটি মূলত সড়ক ও জনপদ বিভাগের। আমাদের আওতায় এই রাস্তাটি নেই। তাই এটি সংস্করণের জন্য কিছু করতে পারি না।