শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ০৩ আগস্ট, ২০২২

স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ অথচ প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

শাহজাদপুরের পোরজনা ইউনিয়নে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করা প্রায় অর্ধ কিলোমিটার, সেই রাস্তার কাজ দেখিয়ে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (কাবিটা) প্রকল্পের ৫ লাখ চৌদ্দ হাজার ৭০৩ টাকা এবং (কাবিখা) প্রকল্পের ৭ দশমিক ৫৯০৩ মেট্রিক টন চাউল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবু ও সদস্য সেরাজুল শেখ পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের জোতপাড়া গ্রামে। এভাবে স্বেচ্ছাশ্রমের রাস্তায় প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর হতভম্ব হয়ে গেছেন এলাকাবাসী। এদিকে, এলাকাবাসীর প্রশ্ন আমাদের করা কাজ দেখিয়ে কীভাবে বিল তোলা হলো। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এই অনিয়মের সঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত দেখভাল কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা রয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, ২১-২২ অর্থবছরের ২য় পর্যায়ের সাধারণ প্রকল্প কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পে জোতপাড়া নওশের মোল্লার বাড়ি হতে জাবেদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পূর্ণ নির্মাণের নামে ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ৭০৩ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পে জোতপাড়া এফআবি রাস্তা হতে রাজ্জাকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের নামে ৭ দশমিক ৫৯০৩ মেঃ টন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয় যার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ টাকার অধিক।

এ বিষয়ে অত্র এলাকার ওয়ার্ড ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী শফিকুল ইসলাম (আমজাদ), আব্দুল সামাদ শেখ, রাজ্জাকসহ অনেক ব্যক্তিই বলেন, আমরা সবার কাছ থেকে টাকা তুলে প্রায় ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যয় করে গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে এই রাস্তা নির্মাণ করি। এই রাস্তা নির্মাণের সময় আমাদের ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবু সাহায্য করেন এবং তখন তিনি বলেন, আমি অন্য প্রকল্প থেকে টাকা আপনাদের দিলাম রাস্তা করার জন্য। কিন্তু এখন জানছি তিনি এবং ইউপি সদস্য মিলে আনুমানিক প্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকার প্রকল্প দেখিয়ে পুরো টাকা অত্মসাৎ করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

প্রকল্প দুটির সভাপতি ও অত্র ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সেরাজুল শেখ বলেন, আমার সই দিয়ে চেয়াম্যান টাকা তুলে নিয়েছে। তাহলে টাকা কে আত্মসাৎ করেছে আপনি না চেয়ারম্যান এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না না আমি টাকা তুলি নাই টাকা তুলেছে চেয়ারম্যান। আমার সই দিয়ে চেয়ারম্যান টাকা তুলে নিয়েছে আমি এই টাকা চেয়ে বারংবার তাগাদা দিলেও তিনি আমাকে টাকা দেননি। এ ব্যপারে তিনি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে বলেন।

এ বিষয়ে পোরজনা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবু প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে তিনি বলেন, পিআইসি (ইউপি সদস্য) টাকা তুলে নিয়েছেন; আমি কেন টাকা তুলবো। এ সম্পর্কে পিআইও’র সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

প্রকল্পের ওই দু’টি বরাদ্দ সম্পর্কে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর সাথে সমন্বয় করে সৃষ্ট জটিলতা সমাধান করার প্রতিশ্রæতি দিলে প্রকল্পের টাকা ছাড় করা হয়। তবে তিনি এ বিষয়ে সংবাদটি প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শাহজাদপুর,স্বেচ্ছাশ্রমে,সড়ক নির্মাণ,প্রকল্প দেখিয়ে,টাকা আত্মসাৎ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close