খুলনা প্রতিনিধি

  ০১ আগস্ট, ২০২২

আড়াই বছরের অপেক্ষার অবসান

খুলনায় আবার চালু ‘নগর পরিবহন’  

ফাইল ছবি

বন্ধের দীর্ঘ আড়াই বছরের অপেক্ষার পর রূপসা-ফুলতলা রুটে আবার চালু হয়েছে ‘নগর পরিবহন’। খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির উদ্যোগে সোমবার (১ আগস্ট) সকালে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত এই বাস চলাচল শুরু হয়। এদিকে, নগরে আবার পরিবহন চালু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

যাত্রীরা বলছেন, স্বল্প সময় আর স্বল্প খরচেই তারা যাতায়াত করতে পারবেন। জিম্মিদশা থেকে মিলবে মুক্তি।

খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুজিবর রহমান বলেন, আড়াই বছর পর রূপসা-ফুলতলা রুটে নগর পরিবহন চালু করেছি। ৩০ মিনিট পর পর বাস চলবে। প্রাথমিকভাবে ৫-৬টি বাস দিয়ে নগর পরিবহন চালু করা হয়েছে। প্রতিটি বাসে সিট ৪০ থেকে ৪৮। প্রয়োজন হলে আরো বাস নামানো হবে। রূপসা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রুটে নগর পরিবহন চলাচলের জন্য ফুলতলা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা এবং সাধারণ যাত্রীদের জন্য ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

নগর পরিবহনের চালক মো. রুবেল বলেন, প্রথম দিন যাত্রী কিছুটা কম। দুই এক দিন গেলে কাঙ্খিত যাত্রী পাওয়া যাবে। এ জন্য প্রচারের পাশাপাশি বাসও বাড়াতে হবে।

লুৎফুন্নাহার পলাশী নামে এক যাত্রী বলেন, আড়াই বছর পর ‘নগর পরিবহন’ চালু হওয়ায় ভীষণ খুশি যাত্রীরা।

জানা গেছে, বর্তমানে খুলনার ফুলতলা থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত মাহেন্দ্র ও অটোরিকশার ভাড়া জনপ্রতি ৬০-৭০ টাকা, যা নগর পরিবহনে ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। এসব ভোগান্তি ও ভাড়া বৈষম্যের শিকার হন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত যাত্রীরা।

নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত নগর পরিবহন চালু হয়েছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা অল্প খরচে যাতায়াত করতে পারবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে নগর পরিবহন চালুর দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর ৬০টি বাস নিয়ে খুলনা শহরে নগর পরিবহন বা টাইন সার্ভিস সেবা চালু হয়। ২০১৭ সালে ৫৫টি বাসই চলাচলের যোগ্যতা হারায়। এর পরের বছর শহরে গণপরিবহন সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে শহরের নগর পরিবহন সেবা বন্ধ হওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। ২০১৯ সালে খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতির উদ্যোগে ৪টি পরিবহন চালু হয়। কিন্তু ইজিবাইক, মাহিন্দ্রা ও অটোরিকশার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রভাবশালীদের কাছে হার মেনে সেগুলো ফের বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে, দীর্ঘদিন নগর-পরিবহন বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছিলেন স্বল্প আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা। ইজিবাইক, মাহিন্দ্রা ও অটোরিকশায় যথেচ্ছা ভাড়া আদায়, বেপরোয়া চলাচলে দুর্ঘটনা, চালকদের অসদাচরণ, যানজটসহ নানা রকমের অত্যাচার সহ্য করতে হয় নগরবাসীকে।

নগরবাসীর ভোগান্তি কথা তুলে ধরে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা মহানগর কমিটি কয়েকদিন নগর পরিবহন চালুর দাবিতে আন্দোলন করে। এ দাবিতে তারা খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খুলনা,বাস
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close