চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

  ৩১ জুলাই, ২০২২

আরও দেড় মাস মিলবে আম, বিক্রির লক্ষ্য ২০০০ কোটি টাকা

ফাইল ছবি

আম মৌসুম শেষ হতে চললেও আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে আরও এক থেকে দেড়মাস আম পাওয়া যাবে। বর্তমানে এসব আম ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে জেলার বৃহৎ কানসাট আমবাজারে। এদিকে বেঁচাকেনা শেষে চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ হাজার কোটি টাকার আম বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতেই গোলাপভোগ, গুটি, ক্ষীরসাপাত ও ফজলি জাতের আম বেচাকেনা শেষ হলেও বর্তমানে ফ্রুটব্যাগিংয়ের ফজলি আমসহ আশ্বিনা, বারি-৪ ও কাটিমন জাতের আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এবার আম উৎপাদন কম হলেও আশ্বিনা, বারি-৪ ও কাটিমন জাতের আমের উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে উৎপাদন কম হলেও দাম বেশি হওয়ায় আমচাষি ও বাগান মালিকরা লাভবান হয়েছেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, প্রতিকূল আবহাওয়া ও অফ ইয়ারের (একবছর পরপর যে বছরে আম কম আসে তাকে অফইয়ার আর বেশি এলে তাকে অনইয়ার বলে) প্রভাবে গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে আমের মুকুল কম আসে ফলে উৎপাদন কম হয়। তবে ছোট গাছের বাগানগুলোতে আমের ফলন ভালো হয়েছে।

অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসন আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে চলতি মৌসুমেও আমপাড়া বা বাজারজাতকরণে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ না করায় প্রাকৃতিকভাবেই আম পাকার পর বাজারজাত করা শুরু হয়। ফলে আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা প্রথম থেকেই আমের দাম ভাল পাচ্ছেন।

এবার মৌসুমের শুরুতেই গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাত আম ৩ হাজার টাকা মণ ধরে, গুটি আম দেড়হাজার টাকা মণ দরে ও ফজলি আম আড়াই হাজার টাকা মণ দরে বেচাকেনা হয়েছে। বর্তমানে আশ্বিনা আম ২২’শ থেকে আড়াই হাজার টাকা মণ, বারি-৪ ও কাটিমন আম সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বেচাকেনা চলছে। এই আম আরও এক থেকে দেড়মাস পাওয়া যাবে বলে আম সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সদর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের আমচাষি জামাল আলী জানান, তার ৮ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম ছিল। কিন্তু এ বছর গাছে মুকুল কম আসায় ফলনও কম হয়েছে। তবে থেকেই বাজারে আমের ভাল দাম পাওয়ায় তিনি মূলধনের চেয়ে ৩গুণ বেশি লাভ করেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজারের আম ব্যবসায়ী সুকুমার প্রামানিক জানান, গোপালভোগ জাতের আম বাজারে প্রথমে আসে। এবার সেই জাতের আমের দাম শুরুতেই ভাল পাওয়ায় তিনি বেশ লাভ করেছেন। বর্তমানে তার বাগানে আশ্বিনা, বারি-৪ ও কাটিমন জাতের আম রয়েছে। আর এসব আমের দামও ভাল পাওয়ায় তিনি করোনাকালে আম বাগান নিয়ে যে লস করেছিলেন তার এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন।

আমচাষি আব্দুর রহিম বলেন, ‘অসময়ে অতিবৃষ্টির কারণে চলতি মৌসুমে গাছে ফলন কম হয়েছে। এছাড়া এবার অফ ইয়ার হওয়ার কারণেও আম কম হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পর্যন্ত আমের দাম কৃষকদের অনুকূলেই রয়েছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে আম পাড়ার কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। আম পাকলেই চাষিরা বাজারজাত করেছেন। তাই এবার আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা দাম ভাল পেয়েছেন। এবার আম বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৬০ লাখ গাছে আমের চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়া চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। এতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার আম বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আম,চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close