আদমদিঘী (বগুড়া) প্রতিনিধি
ব্রিজের পাটাতন খুলে যান চলাচল বন্ধ
বগুড়ার আদমদীঘিতে রক্তদহ বিলের ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজের পাটাতন (লোহার পাত) খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবে ছোট যানবাহনগুলো চলছে ঝুঁকি নিয়ে। স্থায়ীভাবে বিলটির ওপর সিসি ঢালাই সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
শনিবার (৩০ জুলাই) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয়রা ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের ওপর গাছের ডাল রেখে যানবাহন চালকদের বিপদ সংকেত বুঝানোর চেষ্টা করছেন। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা বড় যানবাহনগুলো ফিরে যাচ্ছে। এখানে স্থায়ীভাবে সিসি ঢালাই ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।
এদিকে সড়ক বিভাগ বলছে ‘বেইলী ব্রিজের পরিবর্তে তারা শিগরিই ঢালাই সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করবেন’।
জানা গেছে, উপজেলার কদমা মৎস্য খামারের নিকট ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলের মূল খালের ওপর ২০০৬ সালে সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্বাবধানে ৬০.৯৬ মিটার দৈর্ঘ্য স্ট্রিল ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। এতে বিলপাড়ের ১০ গ্রামের মানুষের প্রায় ১০কিলোমিটার পথ কমে যায়। কৃষিপণ্য ও শস্য পরিবহন করা ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সহজ হয়। ফলে বিলপাড়ের কদমা, করজবাড়ি, পাড় কাশিমিলা, রামপুরা ও ময়ূর কাশিমালাসহ ৮-১০ গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার চিত্র বদলে যায়।
কিন্তু উদ্বোধনের পর ১৬ বছর পার হলেও ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজটিতে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার কাজ করেননি কর্তৃপক্ষ। আর একারণেই বুধবার দুপুরের দিকে বেইলি ব্রিজের পাটাতন (লোহার পাত) খুলে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জীবিকার তাগিদে ছোট যানবাহন যেমন- সিএনজি ও চার্জার চালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
উপজেলার দমদমা গ্রামের অটোরিকশা চালক রফিকুল ইসলাম চাঁন ও করজবাড়ী গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, গাড়ি নিয়ে ওঠার পর পুরো ব্রিজের পাটাতন নড়ে ওঠে। প্রচন্ড শব্দ হয়। যাত্রী নিয়ে ভয়ে ভয়ে ব্রিজ পারাপার হতে হয়। আর এখন যে অবস্থা তাতে যাত্রী নিয়ে তো দূরের কথা ফাঁকা গাড়ি নিয়েও পার হতে ভয় লাগে।
আদমদীঘি সদর ইউপি সদস্য ও করজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, পৌর শহর ও জংশন স্টেশন থাকায় উপজেলার সান্তাহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। ব্রিজটি নির্মাণের আগে সান্তাহার শহরে পৌঁছাতে আদমদীঘি হয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হতো। বর্তমানে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও জীবন-জীবিকার তাগীদে ঝুঁকি নিয়েই ছোট ছোট যানবাহনগুলো এর ওপর দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। দ্রুত ব্রিজটি সংস্কার করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে পাটাতন ভেঙে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের প্রাণের দাবি এখানে ঢালাই সেতু নির্মাণের।
বগুড়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আমানুল্লাহ আমান জানান, সেতুর পরিস্থিতি দেখে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। সে অনুযায়ী অনুমোদন হয়েছে। এর পরিবর্তে এখানে ঢালাই সেতু নির্মাণ করা হবে। এখন দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারের মাধ্যমে বেইলী ব্রিজের স্থলে শিগগিরই ঢালাই সেতু নির্মাণ করা হবে।