চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৯ জুলাই, ২০২২

চাপাইয়ে ধর্ষণ মামলার স্বাক্ষীর বাড়িতে ককটেল হামলা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নে নয় বছরের এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার সাক্ষী সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে ধর্ষণ মামলার আসামি বর্তমান ইউপি সদস্যসহ তার অনুসারীরা। ধর্ষণ মামলা তুলে না নেওয়ায় তিনি এ হামলা চালান। এ সময় প্রায় ৩০-৩৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ও বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর চালানো হয়।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের কালিনগর-ছাভানিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অবিস্ফোরিত ৫টি ককটেল উদ্ধার করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে- আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, গত ৭ জুন সুন্দরপুর ইউনিয়নের ছাভানিয়া গ্রামে নয় বছরের এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে আবদুল হান্নানকে অভিযুক্ত করে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। সম্প্রতি শিশু ধর্ষণ মামলায় জামিন পান ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান। এরপর থেকে তিনি শিশুটির পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। ধর্ষণের শিকার শিশুটি একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালামের আত্মীয় এবং ধর্ষণ মামলার সাক্ষী। ফলে সাবেক ও বর্তমান দুই ইউপি সদস্যের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ধর্ষণের মামলা তুলে না নেয়ার জেরে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম ও তার অনুসারিদের বাড়িতে হামলা চালায় জামিনে বেরিয়ে আসা শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি বর্তমান ইউপি সদস্যসহ তার অনুসারীরা। ককটেল বিস্ফোরণে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ককটেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে দিকবিদিক পালিয়ে যায় গ্রামের লোকজন।

স্থানীয়রা বলছেন- শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে প্রায় দুই শতাধিক লোকজন নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম ও হারেজ আলীসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায় শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান ও তার লোকজন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের লোকজনও ছিলেন। তারা ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাংচুর চালিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।

সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, আমি ও একই এলাকার হারেজ আলী নয় বছরের এক শিশু ধর্ষণ মামলার সাক্ষী। শিশু ধর্ষণ মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসার পর আব্দুল হান্নান আমাদের পেশিশক্তির ভয় দেখিয়ে মামলা তুুলে নিতে চাপ দেন। বাদী মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় আব্দুল হান্নানের লোকজন এ হামলা চালিয়েছেন। এ সময় তারা ৩০-৩৫টি ককটেল বিস্ফোরণ, ১০টি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করেছেন বলে দাবি করে আব্দুস সালামের। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নানের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোজাফফর হোসেন এ বিষয়ে বলেন গত ইউপি নির্বাচন থেকে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম ও বতর্মান ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখান থেকে অবিস্ফোরিত ৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান ওসি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ককটেল হামলা,ধর্ষণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close