শায়েস্তাগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২৮ জুলাই, ২০২২

লোডশেডিংয়ের কারণে সংকটের মুখে হবিগঞ্জের চা শিল্প

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

মৌসুমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে হবিগঞ্জের চারটি উপজেলায় ২৪ টি চা বাগানের চায়ের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি না পাওয়ায় জেনারেটর চালিয়ে ও চায়ের কারখানাগুলোকে সচল রাখা যাচ্ছে না । শঙ্কা দেখা দিয়েছে চায়ের গুণগত মান নিয়ে। যার প্রভাব পড়বে চায়ের রপ্তানি বাজারে।

জানা যায়, সারাদেশে ১৬৩ টি চা বাগানের মধ্যে শুধু হবিগঞ্জের ৪টি উপজেলা মধ্যে মাধবপুর, চুনারুঘাট, বাহুবল ও নবীগঞ্জে রয়েছে ছোট - বড় মোট ২৪ টি চা বাগান। দেশের অভ্যন্তরীণ চায়ের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও চা রপ্তানি করা হয়।

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নিকটবর্তী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দেউন্দি চা বাগানের ডি জি এম এবং জেনারেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, দেশে হঠাৎ করে লোডশেডিং তীব্র হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উৎপাদন প্রক্রিয়া। প্রতি বৎসর জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চা উৎপাদনের মৌসুম। এই মৌসুমে প্রতিটি চা বাগানের কারখানাতে ক্ষেত্র ভেদে ৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার কেজি চাপাতা আসে প্রক্রিয়া জাত করণ। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে এই কাঁচা চা-পাতা প্রক্রিয়াজাত করতে সমস্যায় পড়েছেন চা বাগান কোম্পানি মালিকরা।

প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিংয়ের কবলে ব্যবহার করতে হচ্ছে জেনারেটর। পাশাপাশি সরকার জ্বালানি তেলের নীতি প্রয়োগ করায় জেনারেটর চালানোর জন্য পর্যাপ্ত ডিজেল ও সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চা বাগান সংশ্লিষ্টরা। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় চা বাগানের কারখানাগুলো ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা যাচ্ছে না। এতে করে নষ্ট হচ্ছে চায়ের গুনগত মান।

লাল চান্দ চা বাগানের ব্যবস্থাপক মোফাজ্জল হোসেন ও নোয়া পড়া চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক সোহাগ বলেন , হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ এর বিদ্যুৎ চা বাগানে ব্যবহার করি কিন্তু প্রতিদিন লোডশেডিং কারণে আমাদের চা বাগানসহ সকল চা বাগানে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এদিকে লোডশেডিং কারণে খরচ বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ যখন চলে যায়, তখন চা বাগানের জেনারেটর চালানো হয়। জেনারেটর চালানো জন্য প্রয়োজন হয় ডিজেল। ডিজেল প্রতি লিটার ৮৫ থেকে ১শ টাকা করে ক্রয় করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই ডিজেল দিয়ে আমরা চাহিদা মত পাচ্ছি না। তারপর সরকার বলেছে, পেট্রোল পাম্প সপ্তাহে একদিন বন্ধ থাকবে। যে কারণে জেনারেটর চালিয়ে ও উৎপাদন ঠিক রাখতে পারছি না। তা ছাড়া সব কিছুর দাম বাড়ানো হলেও চায়ের দাম কিন্তু সেভাবে বাড়েনি। এখন এই সমস্যার জন্য চায়ের গুনগত মান যদি কমে যায়, তাহলে চায়ের মূল্য কমে যাবে। চায়ের গুনগত মান খারাপ হলে রপ্তানি বাজারে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। খারাপ মানের কোনো চা বিশ্ব বাজারে বিক্রয় করা সম্ভব না। আর বিক্রয় করলে-ও সেই চা ফেরত আসবে। যার ফলে দেশের চায়ের রপ্তানি বাজার ও চা শিল্প দুটি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চা শিল্প,হবিগঞ্জ,লোডশেডিং
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close