ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

  ১৮ জুলাই, ২০২২

বৃষ্টি নেই, ফসল রক্ষায় সেচের পরামর্শ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়ছে তাপদাহ। ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। বর্ষা মৌসুমের পুরো মাসজুড়ে নেই বৃষ্টির দেখা। সূর্যের প্রখর তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত কয়েকদিনে জেলায় গড় তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ওঠানামা করছে।

সূর্যের প্রখরতায় শুরু ভোর, সকাল ৭টাতেই সূর্য যেন মাথার ওপরে। ঝাঁ ঝাঁ রোদে পোড়া দুপুর। এই পরিস্থিতি এখন ঠাকুরগাঁওয়ে নিত্যদিনের। আষাঢ়ের শেষ দিকেও দেখা নেই কাক্ষিত বৃষ্টির। যার ফলে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বৃষ্টি না হওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে তামমাত্রা। ঘেমে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন শ্রমজীবী থেকে সাধারণ মানুষ। সূর্যের তাপ থেকে বাঁচতে একটু স্বস্তি পেতে ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন গাছতলায়। সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। বৃষ্টি না হওয়ায় তাপদাহে পুড়ছে ফসল, স্বস্তি নেই কৃষকের। তারপরও জীবন ও জীবিকার তাগিদে রোদে পুড়ে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষরা। ফসল বাঁচাতে দিচ্ছেন অতিরিক্ত সেচ।

সদর উপজেলার কহরপাড়া গ্রামের মাজেদ অলি জানান, গত কয়েক দিন থেকে সূর্যের তাপ অনেকে বেড়ে গিয়েছে। তিনি প্রায় দুই একর জমিতে করলা, চালকুমড়াসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ করেছেন। কিন্তু প্রখর রোদের কারণে গাছ ঝলসে যাচ্ছে এবং গাছের গোড়া শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন সকালে ও বিকালে চার থেকে ছয় ঘণ্টা সেচ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। দানারহাট এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, এখন বর্ষা মৌসুম। অথচ গত দুই মাস ধরে তেমন কোনো বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় আমন আবাদে জমি তৈরি ও জমিতে যদি পানি না থাকে তাহলে চারা রোপণ করা সম্ভব নয়।

পৌর এলাকার মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান জানান, ঘরের ভিতরে বৈদ্যুতিক পাখা চালিয়েও কোনো স্বস্তি মিলছে না। বাধ্য হয়ে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোরশেদ মামুম বিল্লাহ্ জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালে বেড়েছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা। এই গরমে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য প্রয়োজন বাড়তি সচেতনতা। ঘরোয়া চিকিৎসাতে পায়খানা ও বমি রোধ করা না গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক নাইমুল হুদা সরকার জানান, আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে এ অবস্থা। গত ২৪ ঘণ্টায় কৃষিবিভাগ ঠাকুরগাঁওয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা করেছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৬৬ শতাংশ। কিছু দিনের মধ্যেই বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সেচের পরামর্শ,বৃষ্টি,ফসল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close