যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটসহ তিন পতিতা আটক
বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সহ তিন পেশাদার পতিতাকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) মধ্যরাত দেড়টার দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাটের কামার পট্টিতে থাকা একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের আটক করে পুলিশ।
আটকৃতরা হলেন, উপজেলার উওর বাদাঘাট ইউনিয়নের ননাই গ্রামের পেশাদার মাদক ও দেহ ব্যবসায়ী কথিত মোটরসাইকেল চালক রমজান মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী (ছদ্মনাম) ভাসানী বেগম (৪৭), একই ইউনিয়নের জামবাগ গ্রামের সোহাগ মিয়ার স্ত্রী (ছদ্মনাম) নাজিয়া বেগম (২২), দিঘীরপাড় গ্রামের সোহাগ মিয়া স্ত্রী (ছদ্মনাম) রাজিয়া বেগম (২২)।
আটককৃতদের মধ্যে রমজান মিয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রী ভাসানী বেগমকে ভাড়া বাসায় সর্দারিনীর আসনে রেখে গত দুই বছরের বেশি সময় স্থানীয়ভাবে এমনকি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পতিতাদের নিয়ে এসে বাদাঘাটের ভাড়া বাসায় রেখে মাদক ও দেহ ব্যবসার হাট খুলে বসেছিল বলে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠে।
তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, পুলিশের নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর ওই তিন পেশাদার পতিতাকে আটক করা হয়।
থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে এলাকাবাসী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজনের একাধিক অভিযোগের পর তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা কামার পট্টিতে থাকা ওই ভাড়া বাসায় অভিযান চালায়।
অভিযানে উপজেলার বাদাঘাট বাজারের কামার পট্টির একটি ভাড়া বাসা থেকে পতিতা সর্দারনী ভাসানী বেগম ও তার সঙ্গে থাকা রূপজীবিনী (ছদ্মনাম) নাজিয়া বেগম, রাজিয়া বেগমকে আটক করে। অপর একটি কক্ষে থাকা কয়েকজন খদ্দের পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে কৌশলে সটকে পড়ে। এ সময় ওই ঘরে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজক ট্যাবলট, কনডম, জুয়া খেলার উপকরণ কয়েক বান্ডিল তাস জব্দ করা হয়।
আটক নাজিয়া ও রাজিয়া জানান, এরা দু’জনই প্রেম পরবর্তী দ্বিতীয় বিয়ের শিকার। স্বামীরা জুয়া ও ইয়াবা আসক্ত ছিলেন সেটি তাদের আগে জানা ছিল না। এরপর গুণধর স্বামীরা জুয়া খেলা আর ইয়াবা কেনার টাকার জন্য তাদের দেহ ব্যবসায় যেতে বাধ্য করে। খদ্দেরদের কাছ থেকে প্রাপ্ত টাকার অর্ধেক ভাগ রমজান ও তার স্ত্রী ভাসানী বেগম নিয়ে নিত বলে জানায় নাজিয়া-রাজিয়া।
আটক ভাসানী বেগম জানান, তার স্বামী রমজান মিয়া ফোন করে খদ্দের পাঠাত এবং বিভিন্নভাবে পতিতাদের নিয়ে এসে ভাড়া বাসায় দেহ ব্যবসা চালিয়ে যেতে তাকে বাধ্য করেছে।
উপজেলার বাদাঘাট বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী পাড়ার লোকজন জানান, রাতদিন কামারপট্টির ভাড়া বাসায় অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য বিভিন্ন লোকজনের অবাধ যাতায়াত ছিল গত দুই বছরের অধিক সময় ধরে। তাদেরকে এসব কার্যকলাপ থেকে বারবার বিরত থাকার অনুরোধ জানানোর পরও উল্টো প্রভাবশালীদের নাম ভাঙিয়ে হামলা-মামলার ভয় দেখাত রমজান ও তার স্ত্রী ভাসানী বেগম।
উপজেলার ননাই গ্রামের রমজানের নিকট অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে আমি সুনামগঞ্জ আছি বলেই মুঠোফোনের সুইস বন্ধ করে দেন।
এ ঘটনায় তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেন। এরপর আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।