নেত্রকোনার মদনে পরকীয়া প্রেমের জেরেই স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন স্বামী। এ ঘটনার ৮ মাস পর বুধবার রাতে (২৯ জুন) অভিযুক্ত পরকীয়া প্রেমিক রুকেল মিয়াকে আটক করে মদন থানার পুলিশ।

রুকেল নেত্রকোনার মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের গাবরতলা গ্রামের ভিক্ষু মিয়ার ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বালালী বাজারে আপেল মাহমুদ এর দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে আসছেন।

এর আগে ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর সকালে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়র পরিষদ ভবনের সংলগ্ন বালালী গ্রামের নিজ বসত ঘর থেকে হিমা আক্তারের (৪৬) রক্তাক্ত মরদেহ ও স্বামী নান্দু মীরের (৫৫) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত নান্দু মীর (৫৫) উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের আলমশ্রী গ্রামের মৃত শামছু মীরের ছেলে। প্রায় ২০ বছর আগে বালালী গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফের মেয়ে হিমা আক্তারকে (৪৬) বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই নান্দু মীর তার শ্বশুর বাড়ি বালালী গ্রামে বসবাস করছিলেন। দাম্পত্যজীবনে সাত বছর বয়সী একটি ছেলে ও পাঁচ বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে তাদের।

এ দিকে হিমা আক্তার তার ছোট বোন জামাই আপেল মাহমুদের দোকেনর কর্মচারী রুকেল মিয়ার সাথে পরকীয়া সর্ম্পকে জড়িয়ে পরে। বিষয়টি তার স্বামী জানার পর দুইজনের মধ্যে কলহ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দুই পরিবারের লোকজন কয়েকবার বৈঠক করে মীমাংসা করেন। মীমাংসার পরেও পরকীয়া প্রেমিকের সাথে অবৈধ মেলামেলায় চালিয়ে যান হিমা। এই ক্ষোভে স্ত্রীকে রেখে নিজ বাড়ি আলমশ্রী গ্রামে চলে যান নান্দু মীর। পরে নান্দু মীর ১০ অক্টোবর বাড়িতে এসে ওই রাতেই নিজের বসত ঘরে স্ত্রীকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেন।

এ ঘটনার পরদিন হিমার ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। অপর দিকে নান্দু মীরের আত্মহত্যার ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পুলিশের দীর্ঘ তদন্তের পর ঘটনার নেপথ্যে রুকেল মিয়ার নাম প্রকাশ পায়।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, পুলিশের দীর্ঘ তদন্তের পর স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামীর আত্মহত্যার প্ররোচনায় রুকেল মিয়ার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

রুকেল মিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে বলেও জানান তিনি।