রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রধান শিক্ষকের কুপ্রস্তাব রাজি নন আয়া, চাকরি খাওয়ার হুমকি
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী কর্মচারী ‘আয়া’কে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই আয়ার চাকরি খাওয়াসহ নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই নারী।
বুধবার (২৯ জুন) সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম তার প্রতিষ্ঠানের একজন নারী ‘আয়া’কে বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের কু-প্রস্তাবে আমি রাজি হয় নাই, এ কারণে তিনি আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত, অশালীন কথাবার্তা এবং স্মার্ট ফোনে অশালীন ছবি দেখতে বাধ্য করে এবং আমাকে লাথি মেরে স্কুল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের একাধিক শিক্ষক ‘আয়া’ কে কুপ্রস্তাবসহ নানা ধরনের হুমকি-ধমকির বিষয়টি স্বীকার করেন। তারা বলেন, এ বিষয়ে আয়া ইউএনও মহদোয়ের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন আলম বলেন, ওই আয়া মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলব। তিনি একটি দায়িত্বশীল চেয়ারে বসে এ ধরনের আচরণের বিষয় তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হয়েছে তা মিথ্যা। স্কুল পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ওই মহিলা কর্মচারী সম্মানির টাকা কম হওয়ায় এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।
দাঁতভাঙ্গা দ্বিমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি’র সভাপতি ও দাঁতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম রেজাউল করীম বলেন, এখনও এ বিষয়ে আমাকে ওই ‘আয়া’ কিছুই জানাননি। আমি অসুস্থ থাকায় ঠিকমতো প্রতিষ্ঠানের খোঁজখবর নিতে পারছি না। অভিযোগ দিলে বিষয়টি স্কুলে বসে দ্রুত সমাধান করব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইবুল ইসলাম বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সরেজমিনে ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর স্কুলের ফরমপূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়, প্রতিষ্ঠাতা না হয়েও একজনকে প্রতিষ্ঠাতা বানানো, স্কুলঘরের ঢেউটিন, রড চুরিসহ স্থানীয় সাংবাদিককে হত্যা’র হুমকিরও অভিযোগ রয়েছে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাছাড়াও এক গ্রাম্য সালিশে তিন বোনকে থু থু খাইয়েছিলেন তিনি।