ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ২৭ জুন, ২০২২

স্ত্রীর দাবি নিয়ে পরকীয়া প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান গৃহবধূর 

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

এক যুগের সংসার, স্বামী ও দুই সন্তান ছেড়ে স্ত্রী’র দাবি নিয়ে পরকীয়া প্রেমিকের বাড়িতে তিন দিন ধরে অবস্থান করছেন এক গৃহবধূ। ওই গৃহবধূ হুমকি দিয়ে বলেছেন, তাকে স্ত্রী হিসাবে মেনে না নিলে পরকীয়া প্রেমিকের বাড়িতেই আত্মহত্যা করবেন তিনি।

কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণছাট গোপালপুর গ্রামের এই ঘটনায় এলাকায় মানুষের মাঝে নান গুঞ্জন ও প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম ছাটগোপাল গ্রামের আবু ইব্রাহীম লিটন প্রায় ১২ বছর পুর্বে একই গ্রামের মোজাম্মেল হকের কন্যা মৌসুমী আক্তারকে (৩০) বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে।

মৌসুমী পাগলারহাট বাজার এলাকায় একটি বেসরকারী কেজি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাটগোপালপুর গ্রামের জহির উদ্দিন বানিয়ার ছেলে আতিকুল ইসলাম (১৮) তার ভাতিজাকে কেজি স্কুলটিতে আনা নেয়ার সুবাদে মৌসুমী ও আতিকুলের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন তারা গোপনে ছুটিয়ে প্রেম করেন।

এরই মধ্যে গত ১৮ জুন আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে মৌসুমী ও তার পরকীয়া প্রেমিক আতিকুল ইসলাম দুজনে মিলে ঢাকার সাভারে একটি ভাড়া বাসায় উঠেন। সেখানে বাসার মালিকের সহায়তায় কাজী ডেকে মৌসুমী তার স্বামী আবু ইব্রাহীম লিটনকে তালাক দেন। একই দিন এফিডেভিটের মাধ্যমে পরকীয়া প্রেমিক আতিকুল ইসলামকে বিয়ে করেন।

বিষয়টি আতিকুলের পরিবার জানতে পারলে মৌসুমীকে নিয়ে আতিকুলকে বাড়ি ফিরতে বলেন। তারা বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী আতিকুলের পরিবার তাদেরকে বাস থেকে নামিয়ে মৌসুমীর কাছ থেকে সকল কাগজপত্র ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে আতিকুলকে ঢাকায় ফেরত পাঠায়।

বিষয়টি জানাজানি হলে ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান প্রেমিক আতিকুল ইসলামের অভিভাবককে বিষয়টি সমাধানের পরামর্শ দেন। কিন্তু আতিকুলের পরিবার চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করে ছেলেকে হাজির না করায় চেয়ারম্যান মৌসুমীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এদিকে নিরুপায় হয়ে মৌসুমী গত ২৫ জুন পরকীয়া প্রেমিক আতিকুলের বাড়িতে গিয়ে তাকে স্ত্রী’র মর্যাদার দেয়ার দাবি জানায়। এরপর থেকে গত তিনদিন সে আতিকুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

মৌসুমী জানায়, যেহেতু তিনি স্বামী আবু ইব্রাহীম লিটনকে তালাক দিয়ে আতিকুলকে বিয়ে করেছেন, তাই আতিকুলের সংসার করতে না পারলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। স্ত্রী’র মর্যাদা না পেলে আতিকুলের বাড়িতেই আত্মহত্যা করবেন বলে জানায় দুই সন্তান, ১২ বছরের স্বামী ও সংসার ছেড়ে আসা এই গৃহবধূ।

আতিকুল ইসলামের পিতা জহির উদ্দিন বানিয়া জানায়, মৌসুমী মেয়েটি তার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। ওই মেয়ে জোর করে বিয়ে করার জন্য বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, আমি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলার হয়রানি থেকে বাঁচানোর জন্য উভয় পরিবারকে মিমাংসার প্রস্তাব দেই। কিন্তু ছেলে পক্ষের সাড়া না পাওয়ায় ওই নারীকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানায়, বিষয়টি তার জানা আছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পরকীয়া,প্রেমিকে,স্ত্রীর,দাবি,অবস্থান
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close