নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই ও নন্দকুজা নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। চলনবিলে প্রতিদিনই পানি বেড়ে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ফলে ওই অঞ্চলে মানুষের পারাপার ও মাছ ধরার প্রধান মাধ্যম ডিঙি নৌকা তৈরি ও কেনাবেচায় ধুম পড়েছে।

শনিবার (২৫ জুন) সরেজমিন গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় নৌকার হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষা ঘিরে নৌকা তৈরির কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বর্ষা মৌসুমে কর্মহীন কৃষক ও জেলেদের মাছ ধরার প্রধান উপকরণ এ নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক কাঠমিস্ত্রি।

হাটের দক্ষিণাংশে ২৫-৩০টি কারখানায় চলছে ডিঙি নৌকা তৈরির কাজ। দোকানের সামনে একটির পর একটি উঠিয়ে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে নৌকাগুলো।

মহাজনরা আগে থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ সংগ্রহ করে বর্ষাকে ঘিরে অপেক্ষায় থাকেন নৌকা বিক্রির পসরা সাজিয়ে। সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার বসে এই হাট। হাটে বিক্রি হয় শত শত নৌকা।

কেনাবেচায় নিয়োজিত ব্যবসায়ী, মিস্ত্রি ও ক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত এখন হাট এলাকা। যার সুফল পাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষরা।

ডিঙি নৌকা কিনতে আসা তাড়াশ উপজেলার কুন্দইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও নাদোর সৈয়দপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, তারা বিলপাড়ের কৃষক মানুষ। বর্ষা মৌসুমে তাদের হাতে কাজ থাকে না। আবার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। মাছ ধরে বাড়তি আয় ও পারাপারের জন্যই তারা ডিঙি নৌকা কিনতে এসেছেন। তবে গত বছরে তুলনায় এবার নৌকার দাম বেশি।

চাঁচকৈড় হাটের ডিঙি নৌকা তৈরির কারিগর মইনুল মৃধা, রবিউল ও আলাউদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকার কদর থাকায় নৌকা তৈরি করে চলে তাদের সংসার। কাঠের প্রকারভেদে নৌকার দাম কম-বেশি হয়ে থাকে বলে জানান তারা।

তারা আরো বলেন. একটি ১০-১২ হাত নৌকা তৈরি করতে খরচ হয় ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা এবং ১২-১৫ হাত নৌকা তৈরিতে খরচ হয় সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। প্রতিটি নৌকা ৫০০ টাকা লাভে তারা বিক্রি করেন।

চাঁচকৈড় হাটের নৌকা ব্যবসায়ী শিবলু ফকির জানান, এবছর বন্যার প্রাদুর্ভাব বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চলনবিলেও আগাম পানি ঢুকেছে। এতে নৌকার চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। গত বছরের তুলনায় শ্রমিক, কাঠ ও নৌকা তৈরির প্লেনসিটের দাম বেশি। ফলে নৌকাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।