কুড়িগ্রামের চিলমারীতে হস্তান্তরের আগেই বৃষ্টির আঘাতে ধসে গেল কোটি কোটি টাকায় নির্মিত আশ্রয়ণ কেন্দ্র, ভেঙে পড়লো ব্যারাক। অল্পের জন্য রক্ষা পেল বন্যায় সদ্য আশ্রয় নেয়া বাসিন্দারা।

এলাকাবাসীরা বলছেন, আশ্রয়ণে মাটি ভরাট ও ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছিল। তাই এই বৃষ্টিতে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের মাটি সরে গিয়ে ভেঙে পড়ে ব্যারাকের ঘর। ঘটনার পর সরেজমিন পরিদর্শন শেষে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

জানা গেছে, উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে গৃহহীন মানুষের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বেশকিছু আশ্রয়ণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আশ্রয়ণ প্রকল্প এর অধীনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তত্ত্বাবধানে মাটি ভরাটের কাজ করে। পরে সেনাবাহিনীর অধীনে ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নেও বেশকিছু আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। সদ্য নির্মাণ হওয়া ইউনিয়নের করাইবড়িশাল আশ্রয়ণ কেন্দ্রের মাটি ধসে ২টি ব্যারাকের ৮টি রুম ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ভাঙনের মুখে রয়েছে বেশ কয়েকটি ব্যারাক।

এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ধস দেখা গেলে অনেক চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারেনি তারা। মাটি ধসের সাথে সাথে ২টি ব্যারাকে ৮টি রুম নিমিশেই ভেঙে পড়ে। বন্যা থেকে রক্ষা পেতে ব্যারাকে সদ্য আশ্রয় নেয়া কয়েকটি পরিবার রক্ষা পেলেও এখনো ভয় কাটেনি তাদের। ইতোমধ্যে বৃষ্টিতে ধস দেখা দিয়েছে একই ইউনিয়নের ঢুষমারা এলাকার ২টি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে। মাটি ভরাটে ব্যাপক অনিয়ম করায় ধসের প্রধান কারণ হিসাবে দাবি করেন এলাকাবাসী।

তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, মাটি ভরাটের পাশাপাশি ভবন তৈরি করতেও নেয়া হয়েছিল অনিয়মের আশ্রয়।

কড়াইবড়িশাল আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মোরশেদা বলেন, ধসে যাওয়া ঘরেই ছিলাম অল্পের জন্য বেঁচে গেছি, এই আশ্রয়ণ থাকতে আর মন চাচ্ছে না। আমাগো জীবনের কি দাম নাই মন্তব্য করে সদ্য আশ্রয়ণ নেয়া আরজিনা, আনিচ, আকলিমাসহ অনেকে বলেন, এখনো ঘর বুঝেই দিল না আর তাতেই যা অবস্থা হামরা কেমনে থাকমো এই ঘরে। এদিকে শান্তি নীড়ে উঠার আগেই অশান্তির থাবায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে গৃহহীন মানুষজন।

কিছু অনিয়মের মধ্য দিয়ে আশ্রয়ণ গুলো নির্মাণ করা হয়েছে মন্তব্য করে চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, আপাতত মাটি ভরাট করে আশ্রয়ণের বাকি ব্যারাক গুলো রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি সরেজমিন ঘুরে এসেছি এবং দ্রুত সঠিক পরিকল্পনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।