চরফ্যাশন-ভোলা প্রতিনিধি
ভোলায় উৎপাদন কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুতের সমস্যা
দেশের শতভাগ বিদ্যুতায়ন জেলা হচ্ছে ভোলা। ভোলার একটি উপজেলা হচ্ছে চরফ্যাশন। অথচ চরফ্যাশন উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনগণ। নিজ জেলায় ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও কোন কোন জায়গায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কখনো কখনো ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকেনা। আবার কোন কোন এলাকায় দিনে রাতে ১৪ হতে ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকেনা।
তীব্র গরমে বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থদের সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। লোডশেডিং না থাকলেও বিভ্রাটের কারণেই জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ট্রান্সফরমারে ফেজ চলে যাওয়ার ফলেই এমনটি ঘটছে। এ কারণে একেকটি এলাকায় একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে আসতে সময় লেগে যাচ্ছে কয়েকে ঘণ্টা। আবার কোন কোন এলাকায় এ ধরনের সমস্যার কারণে ২/৩ দিন ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে কোন সমস্যা ও কারণ ছাড়া। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। গ্রীষ্মে রোদের তাপ বাড়ার সাথে বিদ্যুৎ-বিভ্রাট বেড়ে যায়।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যুতের ২২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন কেন্দ্র থাকলেও বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় পাঁচ থেকে ছয়বার বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ না থাকায় স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ায় দারুণ ব্যাঘাত ঘটছে। ব্যবসা বাণিজ্যেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। অনলাইনে আবেদন, ফটোকপি, কম্পিউটার কম্পোজসহ বিভিন্ন কাজে সমস্যা হচ্ছে।
শিবলু নামের এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক দিন ধরেই আমাদের এলাকায় বিদ্যুতের ঘন ঘন বিভ্রাট হচ্ছে।
মিলন নামের এক গ্রাহক বলেন, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ থাকেনা। অভিযোগ করেও কোন ফল পাওয়া যায় না।
হাজারীগঞ্জ, চরমানিকা, রসুলপুর ইউনিয়নেরএকাধিক একাধিক বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন অন্তত ছয় থেকে সাত বার আমাদের এলাকা থেকে বিদ্যুৎ চলে যায়। সামান্য বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঝড় তুফান হলে তিন থেকে চার দিন বিদ্যুৎ থাকেনা।
চরমানিকা ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক কবির হোসেন বলেন, বিদ্যুতের জন্য এলাকায় শুরু হয়ে গেছে হা-হা কার। আমাদের ফ্রিজের খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মুসুল্লিরা অসহ্য গরমের কারণে মসজিদে অনেক সময় নামাজ আদায় করতে পারছে না। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা ঠিকমতো করতে পারছে না লেখাপড়া।
আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভোলা জেলার মধ্যে চরফ্যাশন উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে আমাদের এলাকায়।
চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের বাসিন্দা তুষার বলেন, আমাদের চরফ্যাশন ও ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের একটা নীতি রয়েছে। যখন আমাদের এলাকায় কোন প্রোগ্রাম হয়, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের আগমন ঘটে, তখন নির্বিঘ্নে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। প্রোগ্রাম শেষ হবার সাথে সাথে বিদ্যুৎ চলে যায়।
ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবুল বাশার এর কাছ বিদ্রুৎ সমস্যা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি। পরে কথা হবে।