রাজশাহী ব্যুরো

  ০৪ জুন, ২০২২

রাজশাহীতে নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অর্থ আদায় চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

রাজশাহী মহানগরীতে নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ১০ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়।

গ্রেপ্তারকৃরা হলেন-রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ডিঙ্গাডোবা এলাকার মশিউর রহমানের ছেলে মনিপ (২৭), মৃত আতাহার আলীর ছেলে কবির হোসেন খিচ্চু (৩৩), আব্দুল মমিনের ছেলে মুন্না ও মুন্নার স্ত্রী মোসা. হানিফা খাতুন (৩১) ও কর্ণহার থানার ডাংগের হাট এলাকার মৃত দুলালের স্ত্রী মোসা. ফরিদা বেগম (৪০)।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সোহাগ (ছদ্মনাম) তিনি একজন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী। গত ২৬ মে ২০২২ সন্ধ্যা সোয়া ৭ টায় অপরিচিত একটি মহিলা তাকে ফোন করে বলেন তার নাম মোসা. হানিফা খাতুন তার স্বামী ওষুধ কোম্পানিতে চাকুরি করেন। তিনি পরিবারসহ রাজপাড়া থানাধীন ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনী এলাকায় ভাড়া থাকেন। তার ভাড়া বাসায় ২-৩ টি নষ্ট ফ্যান, ১টি পুরাতন সোফাসেট এবং অপ্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র রয়েছে যা তিনি বিক্রি করতে চান। এ কারণে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে ওইদিন রাতেই তার বাড়িতে আসতে বলেন।

তখন সোহাগ রাতে না গিয়ে দিনে যাবার কথা বললে, হানিফা তার স্বামীর সাথে আগামীকাল সকালে বগুড়া জেলায় বদলি সূত্রে চলে যাবে বলে মালামালগুলো অন্তত দেখে যেতে বলেন। এরপর হানিফার কথা বিশ্বাস করে তার দেওয়া ঠিকানা অনুয়ায়ী পৌঁছলে ওই বাড়ির নিচ তলার একটি রুমে সোহাগকে নিয়ে যান। রুমে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে জড়িয়ে ধরেন এবং সেখানে পূর্ব থেকেই ওৎ পেতে থাকা প্রতারক চক্রের ৪ জন সদস্য রুমের মধ্যে প্রবেশ করেন। এরপর তারা হানিফার সাথে সোহাগের আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তোলেন। তারপর সোহাগকে চড়-থাপ্পড়, হুমকি ও ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার ভয় দেখিয়ে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেন। সে সময় সোহাগের কাছে থাকা নগদ ৪ হাজার টাকা আদায় করেন এবং রাতের মধ্যেই আরও অন্তত ৪০ হাজার টাকা দিতে বলেন। আর বিষয়টি প্রশাসন বা অন্য কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। তখন বাসায় গিয়ে কোন উপায়ন্ত না পেয়ে ওই ব্যবসায়ী ধার করে আসামিদের ৩০ হাজার টাকা দেন।

এ ঘটনায় সোহাগ ডিবি পুলিশের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ প্রদান করেন। এরপর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক চক্রটিকে ধরার জন্য প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন। পরে আরএমপির গোয়েন্দা শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে একটি টিম ব্যবসায়ী সোহাগকে সাথে নিয়ে শুক্রবার (৩ জুন) বিকেলে অভিযানে নামেন। এসময় ওই চক্রটিকে জানায় বাকি টাকা কোথায় নিয়ে আসবেন। তখন সেই বাসাতেই যেতে বললে ডিবি পুলিশ সোহাগকে সাথে নিয়ে ৩ জুন বিকাল সোয়া ৪ টার দিকে রাজপাড়া থানাধীন ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনী এলাকায় হানিফার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে চক্রটির ৫ সদস্যকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করেন। এসময় গ্রেপ্তারকৃত আাসামিদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ১০ হাজার টাকা ও ৫ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে শনিবার (৪ জুন) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন আরএমপির মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রফিকুল আলম।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গ্রেপ্তার,অর্থ আদায় চক্র,নারী,রাজশাহী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close