রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ২৬ মে, ২০২২

নৌকাই একমাত্র ভরসা ১৬ গ্রামের মানুষের

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের বাওয়ার গ্রামের একটি খালের উপর ব্রিজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হচ্ছে ১৬ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। কখনো নৌকায় আবার কখনো বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।

ব্রিজের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও তাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখেনি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে শীত বর্ষা সকল মৌসুমে তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। বুধবার (২৬ মে) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বাওয়ার গ্রামের হাসমত মেম্বারের বাড়ি থেকে ছক্কু মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ৮৫ মিটার দুরত্ব একটি ব্রিজের অভাবে চুলিয়ার চর, বালুর গ্রাম, বড়াইবাড়ি, ঝাউবাড়ি, পূর্ব দুবলাবাড়ি, পাটাধোয়া পাড়া, কলাবাড়ি, বাওয়ার গ্রাম, পুরাতন যাদুরচর, কাশিয়া বাড়ি ও উত্তর যাদুর চরসহ ১৬ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও ওই এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল মাদ্রাসা রয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও নির্মিত হয়নি একটি ব্রিজ। ফলে কোন কোন বছর বাশেঁর সাকোঁ আবার কোন বছর নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারপার হতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে নৌকা পানির নিচে তলিয়ে দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছেন অনেকেই। গত বছর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় একটি বাশের সাকোঁ নির্মাণ করা হয়। সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। এতে রৌমারী উপজেলা শিবেরডাঙ্গি, সায়দাবাদ, কর্তিমারী ও রৌমারী সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় পড়ে ১৬ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। বর্তমানে উপজেলার সাথে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌকা। ফলে বাওয়ার গ্রামের সুরুজ্জামাল নামের একজন ব্যক্তি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কষ্ট অনুভব করে ওই খাল পারাপারের জন্য নৌকা বসান। এই নৌকা দিয়ে কৃষক কৃষি পূণ্য বাজারজাতকরণ, ধান, শাকসবজি বাজারে আনা নেওয়া করছেন। সেই সাথে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ হাজার লোকজন পারাপার হন।

ওই এলাকার স্কুল শিক্ষার্থী আয়শা সিদ্দিক জানান, মাত্র কয়েক মিটার খালের উপর ব্রিজ না থাকায় সারা বছর নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপর হচ্ছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি ব্রিজটি যেন দ্রুত করে দেওয়া হয়।

স্কুল শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ জানায়, একটি পাকা ব্রিজের অভাবে সারা বছর নৌকা দিয়ে পাড় হচ্ছি। আমরা দ্রুত ব্রিজ চাই। এলাকাবাসী আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বছর এই খালের উপর বাশেঁর সাকোঁ দেওয়া হয়েছিল। সেটা দিয়ে সবাই সহজে যাতায়াত করতে পারত। বর্তমানে নৌকা দিয়ে পার হচ্ছি। স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের কাছে একটি ব্রিজের জন্য জোর দাবি করছি।

স্থানীয় রৌমারী সদর ইউপি মহিলা সদস্য রুপা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকার মানুষ খুব কষ্টে যাতায়াত করে আসছে। কয়েকবার উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম রাসেল জানান, বিষয়টি নিয়ে সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। এলাকাবাসীর যাতায়াতের জন্য আপাতত বাশেঁর সাকোঁর ব্যবস্থা করা হবে এবং ওই খালে ৬০ মিটার একটি ব্রিজের জন্য সকল প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়, আশা করি আগামী দুই এক মাসের মধ্যেই টেন্ডার হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রৌমারী,বাঁশের সাঁকো,নৌকা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close