মনিরুজ্জামান, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম)
রাস্তাজুড়ে ধান শুকানোর মেলা
টানা দুই সপ্তাহ বৃষ্টির পর রোদ, ব্যস্ত কৃষক
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে টানা দুসপ্তহের বৃষ্টির পর রোদ ওঠেছে। আকাশ পরিষ্কার। সূর্য বেশ উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এ সুযোগে ধান শুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা। উপজেলার বিভিন্ন পাকা রাস্তার দ ধারে লাইন করে ধান শুকাতে দেখা গেছে। দারুণ ব্যস্ত তারা। কোথাও বসে বা বাড়িতে খোশগল্প করে সময় কাটানোর ন্যূনতম অবসর তাদের নেই। গত দুই সপ্তাহের কৃষকের কান্নার অবসান হওয়ার পথে এমনটাই বলছে কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিস। যদিও অনেক কৃষকের ধান এখনো পানির নিচে এবং ধান পঁচে চারাগাছ গজিয়েছে।
রবিবার (২২ মে) সরেজমিনে ভূরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সারা রাস্তাজুড়ে ধান শুকানোর মেলা বসেছে। কেউ কেউ রাস্তার ওপরে কাটা ধান মাড়াই করছেন। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী ও বৃদ্ধরাও কাজ করছেন। কেউ পা দিয়ে ধান ওলটিয়ে দিচ্ছেন আবার কেউ লাইলন সুতার (নেট) জালে ধান শুকাতে দিয়েছেন।
কথা হয় উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের আব্দুল জলিলের সাথে তিনি জানান, পাকা রাস্তা থেকে প্রায় এক কিলো দক্ষিণে তার ৩০ মণ মাড়াই করা ধান এক সপ্তাহ থেকে ঘরে থাকায় গন্ধ ওঠেছে। খুব ভোরে ঠেলা গাড়িতে ধান পাকা রাস্তায় নিয়ে এসেছি। সারা দিন রোদ থাকলে ধান শুকিয়ে যাবে ইশনাআল্লাহ।
বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নের ঘুন্টিঘর এলাকার আনিছুর রহমান জানান, তিন বিঘা জমির ধান পানির নিচে। রোদ থাকলে আজই সব ধান কাটা মাড়াই শেষের হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৬ হাজাল ১৯৪ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। আর ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৯২.৯২ মেট্রিক টন। টানা বৃষ্টির কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কম হতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ৪১ মি.মি বৃষ্টি হয়েছে। মে মাসে এখন পর্যন্ত ৫১৮ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মে মাসে সাধারণত এত বৃষ্টিপাত হয় না। পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে এটা হচ্ছে। যা আগামী ২৪ মে পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।