আব্দুল আলিম, সাতক্ষীরা

  ১৯ মে, ২০২২

সাতক্ষীরার আম যাবে ইউরোপের বাজারে

সাতক্ষীরার আম। ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

মধু মাস জ্যৈষ্ঠ আসার আগেই সাতক্ষীরার বাজারে উঠতে শুরু করেছে বিষমুক্ত গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, হিমসাগরসহ সুস্বাধু বিভিন্ন প্রজাতির দেশি আম। আবহাওয়া আর মাটির গুনাগুনের কারণে দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। তবে এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাতক্ষীরায় আম উৎপাদন কম হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, প্রতিবারের মতো এবারও সাতক্ষীরার বিষমুক্ত ১০০ মেট্রিক টন আম রফতানি হবে ইউরোপের বাজারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আনুষ্ঠানিকতায় সাতক্ষীরায় গত মে পাকা আম পাড়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাই, বৈশাখিসহ নানা জাতের আমে ভরপুর হয়ে উঠেছে সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজার। গ্রামাঞ্চল থেকে ভ্যান বিভিন্ন পরিবহনে শহরের এই বড় বাজারের আড়ৎগুলোতে আসছে হরেক রকমের আম। তবে ঘূর্নিঝড়ের আশঙ্কায় চাষিরা তড়িঘড়ি করে আম বাজারজাত করছেন বলে অনেকে জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ল্যাংড়া, হিমসাগর, আম রুপালী, গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাই, বৈশাখিসহ নানা প্রজাতের আম রয়েছে।

সাতক্ষীরা কাঁচা পাকা মাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহিম বাবু জানান, মৌসুমের শুরুতে আমের চাহিদা একটু বেশি থাকে। ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আম কিনতে সাতক্ষীরার আম বাগান আড়তগুলোতে ভিড় করতে শুরু করেছে। এখানকার বড় বাজারের আড়তগুলোতে গোবিন্দভোগ প্রতিমন আম বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২০০ টাকা, আর গোপালভোগ গোলাপখাসসহ অন্যান্য আম বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৯০০ টাকা প্রতি মন।

তিনি আরও জানান, গতবারের তুলনায় এবার বেচাকেনা একটু ভালো। তবে এবার শীত কুয়াশার কারণে আমের মুকুল কম আসায় আম হয়েছে খুবই কম। এর ফলে আম ব্যবসায়ীরা যারা এবার গাছ কিনেছেন তারা লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। তারা সরকারের কাছে আমের ন্যায্যমূল্য বেধে দেওয়াসহ তাদের প্রতি সরকারের সুনজর দেওয়ার আহ্বান জানান।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম জানান, আমের জন্য সমৃদ্ধ সাতক্ষীরা। সারা বাংলাদেশ থেকে এবার ৬০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি হবে। এর মধ্যে বছর সাতক্ষীরা থেকে ১০০ মেট্রিক টন গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া রুপালি আম ইউরোপের বিভিন্ন বাজারে রফতানি হওয়ার কথা রয়েছে।

এই কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, নিরাপদ পরিবেশবান্ধব আম চাষের জন্য ৫০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জেলায় ১৩ হাজার ১০০ জন আম চাষির হাজার ২৯৯টি বাগান রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ৫০ ভাগ গাছে আমের মুকুল এসেছে। ফলে এবার আম কম হয়েছে। বছর আমের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু সেটি পূরণ হবে না বলে জানালেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আম,সাতক্ষীরা,রফতানি,ইউরোপ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close