গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ
গো-খাদ্যের মূল্য বাড়ায় দিশেহারা খামারিরা
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে বিপুলসংখ্যক গরু, ছাগল ও মহিষ মোটাতাজা করছেন খামারিরা। কিন্তু দিন যতই এগিয়ে আসছে গো-খাদ্যের দাম ততই বেড়ে চলেছে। এতে খামারিদের খরচ বাড়ছে।
খামারিরা জানান, গমের ভুষি ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা বস্তা, ভুট্টার গুড়া ১৭০০ টাকা বস্তা, যব ৫০ টাকা কেজি,ধানের কুড়া ৭৫০ বস্তা, খৈল ৪৫০০ টাকা থেকে ৫০০০টাকা বস্তা, খেসারী ভুসি ১৬০০ টাকা ( ৩০কেজি) বস্তা এবং ঘাস প্রতি মুঠা ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাউফিড প্রতি বস্তা ১৫০০ টাকা। এ্যাংকর ডালের ভুষি ১২০০ টাকা বস্তা দরে কিনতে হচ্ছে। ধানের খড় কিনতে হচ্ছে প্রতি আঁটি ৫/৬ টাকা দরে। এই অবস্থায় গো-খাদ্যের দাম কমানো না হলে খামার রাখা অসম্ভব হয়ে উঠবে।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় গো-খামার ১৩৪৮০, ছাগল ৫০৪, ভেড়া ২০৬, হাস ৭২৪ এবং মুরগী ১২৪৫৭ টি খামার রয়েছে।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়িতে মিল্কভিটাকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠে হাজার হাজার গরুর খামার। এসব খামারে উন্নতজাতের গাভী পালন করে জেলার হাজার হাজার খামারি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে এই অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়।
উৎপাদিত এই দুধের প্রায় এক লাখ লিটার দুধ মিল্কভিটা ও ৫০ হাজার লিটার দুধ অন্যান্য বেসরকারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানি সংগ্রহ করে। অবশিষ্ট প্রায় দুই লাখ লিটার দুধ সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বাজারগুলোতে বিক্রি হয়। খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে দুদ্ধ খামারিরাও পড়েছে বিপাকে।
সিরাজগঞ্জে সদর উপজেলার খামারি শহিদুল ইসলাম জানান, এবছর আমার খামারে ২৫ টি ষাঁড় রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে গরুগুলোকে মোটাতাজা করছি। তবে গরুর খাদ্যের দাম এত বেশি হওয়ার কারণে খরচ বেড়েছে। কোরবানির হাটে গরুর ভালো দাম পাবো কি না তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
মিল্কভিটার পরিচালক ও রেশম বাড়ি দুদ্ধ সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ ফকির জানান, ‘গো-খাদ্যের দাম আগের তুলনাই অনেক বেশি। খামারিরা নিজে না খেয়ে গরু লালন পালন করছে। এ ক্ষেত্রে সরকার সহযোগিতা পেলে খামারিরা কিছুটা হলেও বাঁচতে পারবে।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার জেলায় পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বলেন সরকারি নির্দেশনা না থাকায় খামারিদের সহযোগীতা করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে জেলায় মুরগী, ডিম, দুধ ও মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।