গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

  ১৪ মে, ২০২২

গুরুদাসপুরে শ্বশুর-পুত্রবধূ দ্বন্দ্বে এক লিচু বাগান দুইবার লিজ

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের ২৫ বিঘা লিচু বাগানের ২২২টি গাছের অর্ধকোটি টাকার লিচু শ্বশুর-পুত্রবধূর উত্তরাধিকার দ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লিজ নেওয়া মালিকরা। স্থানীয় দুজন ক্রেতা ওই বাগান সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শ্বশুর ইউসুফ আলীর নিকট থেকে লিজ নেন। অপরপক্ষ পুত্রবধূ পুলিশের ঊবর্ধতন কর্মকর্তা ফরিদা পারভীনের নিকট থেকে লিজ নিয়েছেন বলে দাবি করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার (১৪ মে) বিকালে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শ্বশুর ইউসুফ আলীর কাছ থেকে বাগান লিজ নেওয়া আলম মন্ডল ও আরমান আলী লিচু বাগানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সেখানে তারা লিখিত অভিযোগ করে বলেন, ২৫ বিঘা লিচু বাগানের জমির উত্তরাধিকার নিয়ে শ্বশুর ইউসুফ আলী ও তার মৃত ছেলের এতিম দু সন্তানের পক্ষে পুত্রবধূর দ্বন্দ্ব রয়েছে। সেটা তাদের পারিবারিক বিষয়। কিন্তু তারা ২৫ বিঘা বাগানের ওই ২২২টি লিচু গাছ লিখিত চুক্তিনামা মূলে ৮ লাখ টাকায় এক বছরের জন্য লিজ নিয়ে তারা লিচু গাছের পরিচর্যা করেন। তারা দীর্ঘ দিন ধরে বাগানগুলোর পরিচর্যা, সেচ, কিটনাশক ছিটানো, পাহারা বসানোসহ সমস্ত কাজ করেছেন। সবমিলিয়ে প্রায় ১৮ লাখ টাকা তাদের খরচ হয়েছে। তারা আশা করছেন ওই লিচু ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন। এখন লিচুগুলো পরিপক্ক হয়ে বাগানে ঝুলছে। লিচু বিক্রির উপযোগী হলে এই মুহুর্তে ওই এলাকার লিটন ও মুন্না ওই বাগান লিজ নেওয়ার দাবি করে লিচু পাড়া শুরু করেন। এতে তারা শংকিত হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

তবে লিটন ও মুন্না অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই জমির মূল মালিক ছিল ইউসুফ আলীর মৃত স্ত্রী রাজিয়া বেগম। উত্তরাধিকার সূত্রে তার মৃত সন্তান শফিকুল ইসলামের ছেলের দু সন্তান বর্তমান মালিক (মৃত দাদীর সম্পত্তি)। তারা ওই লিচু এতিমদের তত্বাবধায়ক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফরিদা পারভীন রানুর কাছ থেকে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা দিয়ে লিজ নিয়েছেন। লিজ সূত্রে ওই লিচুর বাগানের বর্তমান মালিক তারা।

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বাগান বিক্রির কথা স্বীকার করে জানান, এখন পর্যন্ত সমস্ত সম্পত্তির মালিক তিনি। অসুস্থতার কারণে বর্তমানে তিনি রাজশাহী রয়েছেন। এ সুযোগে তার পুত্রবধূ নাবালক সন্তানদের পক্ষে জমির দখল দাবি করছেন। সেটা আইন ও নিয়ম বহির্ভূত।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, হেড কোয়াটার্স) ফরিদা পারভীন রানু দাবি করে বলেন, তার মৃত শাশুড়ির রেখে যাওয়া সম্পদ ও সম্পত্তির অংশিদার তার স্বামীর ছোট নাবালক সন্তানরা। অংশিদার সূত্রে প্রাপ্ত বাগানের লিচু সন্তানদের পক্ষে তিনি লিজ দিয়েছেন।

গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. আব্দুল মতিন জানান, এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাইনি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গুরুদাসপুর,লিচু,শ্বশুর,পুত্রবধূ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close