গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ১৪ মে, ২০২২

ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক, ষোলো আনা পারিশ্রমিকেও মিলছে না শ্রমিক

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় বোরো ধান কাটা শুরু হলেও বৈরী আবহাওয়া ও শ্রমিক সংকটে দিশেহারা সিরাজগঞ্জের কৃষকরা। টানা বৃষ্টিতে পাকা ও আধাপাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। কিছু কিছু নিচু এলাকায় পাকা ধান রয়েছে পানির নিচে, কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে সময় মত ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। এভাবে চলতে থাকলে মাঠের ধান সুষ্ঠ ভাবে ঘরে তুলতে পারবে কি না তা নিয়েও তাদের মনে এক অজানা শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, সিরাজগঞ্জে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে বোরো ধান। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে স্থানীয় কৃষি সূত্রে জানা গেছে। সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি সিরাজগঞ্জ জেলায় বোরো চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১,৪০,৫২৫ হেক্টর। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬,৮৩,৭২৫ মে.টন, কিন্তু আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার জেলায় ১,৪১,৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।

উল্লাপাড়া উপজেলায় বাড়পাঙ্গাশী গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক, জুড়ান মন্ডল, উধুনিয়া গ্রামের গণি প্রাং, রায়গঞ্জের ভুইয়া গাতির গ্রামের কৃষক সালাম জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ধানের পোকা আক্রমণ না থাকায় সার ও বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের কারণে বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা দুঃশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। ধানগুলো ঠিকমতো ঘরে তুলতে পারছি না। সুযোগ বুঝে স্থানীয় কৃষি শ্রমিকেরা তাদের মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্যান্য বছর বাইরের শ্রমিক এসে ধান কাটলেও এবার তাদের সংখ্যা খুবই কম। ফলে তীব্র হয়ে উঠেছে শ্রমিক সংকট।

কৃষক কামাল জানান, বর্তমানে কৃষি শ্রমিকের মজুরি ৮০০ টাকা, দুই বেলা খাবারসহ ১০ টাকা মূল্যের এক প্যাকেট সিগারেট দিতে হয়। শ্রমিক কাজ করে সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।

এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্না ইয়াসমিন সুমি জানান, এবছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি আরও জানান, কৃষি শ্রমিকের অভাবে অনেকেই মাঠের পাকা ধান এখনো কাটতে পারছেন না। এর মধ্যেই উৎপাদিত জমির ধান অর্ধেক কাটা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এ বছর প্রতিটি মাঠে এক সাথে ধান পাকায় শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে শ্রমিক সংকট দূর হবে। সুষ্ঠভাবে ধান কাটা, মাড়াই করে ঘরে তুলতে পাড়লে কৃষকেরা লাভবান হবে। ইতিমধ্যে ৩০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এবারের ব্রি আর ৭৯, ২৮, ৮১, ২৯ জাতের ধান বেশি আবাদ হয়েছে বলেও তিনি জানান।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বোরো আবাদ,বাম্পার ফলন,সিরাজগঞ্জ,শ্রমিক সংকট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close