রুহিয়া প্রতিনিধি

  ১২ মে, ২০২২

দুর্নীতিবাজ খাদ্য কর্মকর্তাকে রুহিয়া গুদামে না

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর খাদ্য গুদামের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদকে অপসারণের পরিবর্তে রুহিয়া খাদ্য গুদামে বদলি করায় এখানকার ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা তাকে এ গুদামে দেখতে চান না দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিকেলে রুহিয়া চৌরাস্তা মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস, আজাহারুল ইসলাম ও ঠাকুর চন্দ্র সেন।

বক্তারা জানান, জেলার হরিপুর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ। অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের নামে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের নিকট ধান, চাল ও গম সংগ্রহ করতে বস্তা প্রতি ৩০-৫০ টাকা হারে সালামি আদায় করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। যেসব ব্যবসায়ী নিয়মিত সালামি গুনেন তাদের নিম্ন মানের চাল খাদ্য গুদামে নেওয়া হয়। আর যারা সালামি দিতে আপত্তি জানায় তাদের পদে পদে হয়রানি করা হয়। এছাড়াও সংগ্রহ মওসুম পরবর্তী সময়ে সংগ্রহকৃত চিকন চাল কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে আঁতাত করে রাতের আধারে বাইরে পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় বছরের বেশিরভাগ সময়ে খামালে চৌকা করে অর্থাৎ ফাঁকা রাখা হতো। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি হরিপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্মনকে প্রধান করে পীরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিয়াউল হক শাহ ও কারিগরী খাদ্য পরিদর্শক মো. জুলফিকার আলীসহ ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সরজমিনে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

২৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি সরজমিনে গিয়ে ওই খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করলে বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে। তন্মধ্যে এফএস ১নং গুদামের ৩/৮৭০৫০৪ নং খামালে চৌকা করে ভেতরে চালশূন্য আর ওপরে ও বাইরে খামাল ঠিক করে রাখা হয়। তদন্তকালে ৮৪ বস্তা চাল কম পায় তদন্তকারী দল। একইভাবে ২/৮৭০৫০৩ নং ডেলিভারি খামালে মজুদের অতিরিক্ত বেশকিছু বস্তা চাল বেশি পাওয়া যায়। অর্থাৎ টাকা ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের চাল সময় মতো সরবরাহ না করায় ডেলিভারি খামালের বেশি চাল পাওয়া যায়। এছাড়াও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল সরাসরি অটো মিল হতে সরবরাহ করার নিয়ম থাকলেও গুদাম কর্মকর্তা পুষ্টির চালও গুদামের খামালে তুলে রাখেন। এছাড়াও বেশ কিছু খামালে নিম্ন মানের ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল পাওয়া গেলেও তদন্তকারী দল মাত্র ২৮ বস্তা নিম্ন মানের চাল পাওয়ার কথা স্বীকার করে প্রতিবেদন দেয়। পরবর্তীতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম খামালের ভেতরে ছোট আকারের গর্তের কথা স্বীকার করে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রংপুর মহোদয়ের বরাবরে ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠান। পরবর্তীতে অর্থের বিনিময়ে উপরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি সদরের রুহিয়া খাদ্য গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি হন।

গত ২৮ মে রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল ইসলাম সাক্ষরিত এক পত্রে আব্দুর রশিদকে রুহিয়ায় বদলি করা হয়।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রুহিয়া,গুদাম
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close