উজ্জ্বল নাথ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম)

  ১০ মে, ২০২২

জনদুর্ভোগ চরমে

ধসে পড়েছে হালদা নদীর সংযোগ চেংখালী খালের স্লুইস গেইট

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

চট্টগ্রামের হালদা নদীর সংযোগ চেংখালী খালের স্লুইস গেইট জোয়ারের তোড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে হাটহাজারী ও রাউজান দুই উপজেলার অংকুরীঘোনা-গড়দুয়ারা হালদা নদীর বেড়িবাঁধসহ সড়ক দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ওই সড়কে চলাচলকারী লোকজনের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। স্লুইস গেইট বিলীন হয়ে যাওয়ায় পশ্চিম গড়দুয়ারা ও পূর্ব মেখল এলাকার বিপুল পরিমাণ কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদন নিয়ে কৃষকেরা শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের পানি চেংখালী খালের মধ্যে ঢুকে যাতে বন্যা সৃষ্টি হতে না পারে এবং শুষ্ক মৌসুমে হালদার জোয়ারের পানি খালের ভেতর নিয়ে ইরি-বোরো ও মৌসুমি তরিতরকারির চাষাবাদের জন্য চেংখালী খালে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করেছিল। বছর খানেক আগে এই স্লুইস গেইটের পাশে গর্তের সৃষ্টি হলে ক্রমান্বয়ে সেটি বড় হতে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে স্লুইস গেইটটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ফলে হাটহাজারী ও রাউজান দুই উপজেলার লোকজন যারা হালদার বেড়িবাঁধসহ সড়কটি চলাচলের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করত তাদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।

অন্যদিকে, তাছাড়া বিলীন হয়ে যাওয়া ওই স্লুইস গেইট দিয়ে জোয়ারের পানি খালের ভেতরে ঢুকে পশ্চিম গড়দুয়ারা ও পূর্ব মেখল এলাকার বিপুল পরিমাণ কৃষি জমির ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া স্লুইস গেইট পাড়ি দিয়ে যারা জমিতে চাষাবাদ করত তারা যাতায়াতের অভাবে নিজের জমিতে চাষাবাদ করতে পারছে না। ফলে অনেক ফসলি জমি অনাবাদী থেকে যাচ্ছে। এতে কৃষি উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।

কৃষক মোঃ ইয়াকুব ও আব্দুল কাদের বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের পশ্চিমাংশে তাদের কৃষিজমি রয়েছে। স্লুইস গেইট ধসে পড়ায় তাদের জমির সব ফসল জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

তারা আরো বলেন, স্লুইসগেট কিংবা সড়কটি দুদিনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, মাসখানেক আগে থেকেই ছোট ছোট ফাটল দেখা গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসারসহ অনেকে এসে পরিদর্শন করে ক্যামরায় ছবি তুলে সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে গেছেন, কিন্তু কার্যত কোন উদ্যোগ নেননি। ফলে আজকের এই দৃশ। শুরুতেই যদি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হত তাহলে এত বড় ক্ষতি হতো না। এ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় জোয়ারের পানির কারণে গেট সংলগ্ন একটি নূরানী মাদরাসার পাঠ বন্ধ হয়ে যেতে পারে । যেখানে প্রায় ২/৩ শ শিক্ষার্থী রয়েছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হবে মেখল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। তারা স্লুইসগেটসহ সড়কটি দ্রুত সংস্কারে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার মোঃ শহীন বাদশা ও শৈমন সিং গণমাধ্যমকে জানান, হালদা নদীর চেংখালী খালের স্লুইস গেইট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি পাউবোর দুই কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন। ধসে পড়া স্লুইসগেটটি তুলে নেওয়া হবে। এছাড়া স্লুইসগেটসহ বেড়িবাঁধটি দ্রুত সংস্কারের জন্য পরির্দশন করে সার্ভে করে রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করি, চলতি বর্ষার পর স্লুইসগেট ও বেড়িবাঁধটি সংস্কারের কাজ করা হবে।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শাহিদুল আলম বলেন, স্লুইস গেইট ও সড়কটি ধসে পড়ার বিষয় নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সংস্কার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত সংস্কার শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হাটহাজারী,চট্টগ্রাম,মেখল,স্লুইসগেইট
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close