মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

  ০৩ মার্চ, ২০২২

প্রকৌশলীর ‘নলকূপ নলকূপ খেলা’

নেত্রকোনার মদন হাওর অঞ্চলের মানুষের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপনের প্রকল্প নিয়েছেন সরকার। আর ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত করেছেন মদন উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হান।

এ অঞ্চলের গ্রামগুলোতে আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপনের কথা রয়েছে। সরকারি নিয়ম-নীতির কোন তোয়াক্কা না করে নিজ ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে ওই নলকূপ পৌরসদরে স্থাপন করছেন প্রকৌশলী রনি রায়হান। বিক্রিও হচ্ছে চড়া দামে। এ যেন প্রকৌশলীর নলকূপ নলকূপ খেলা।

আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপনের এমন অনিয়মে প্রকৌশলী রনি রায়হানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন মদন এলকার মিনারুল বাবু নামের এক বাসিন্দা। জনস্বাস্থ্য অফিসের ভোগান্তি ও প্রকৌশলীর অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

মদন জনস্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সমগ্র হাওর প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ২০৮ টি আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নিয়ম রয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ে কয়েকটি অসহায় পরিবার ব্যাংকের মাধ্যেমে সরকারি ফি বাবদ ১০ হাজার ৩৫ টাকা জমা দিয়ে সুবিধাভোগীর আওতায় আসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকৌশলী রনি রায়হান প্রান্তিক পর্যায়ে হতদরিদ্রের ঠিকানা ব্যবহার করে উৎকোচের বিনিময়ে কৌশলে পৌরসদরসহ বিভিন্ন স্থানে নলকূপ স্থাপন করছে। নলকূপ স্থাপনের নিম্ন-মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। এদিকে জনস্বাস্থ্য অফিসের স্টাফদের সহযোগিতায় ৩০/৪০ হাজার টাকায় গভীর নলকূপ বিক্রি করার কথাও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

স্থানীয়দের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, পৌরসদরের বিভিন্ন স্থানে জনস্বাস্থ্যর আওতাধীন আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। তবে স্থাপনকৃত নলকূপগুলো বরাদ্দ রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। বেশ কিছু নলকূপে নিম্নমানের সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপকারভোগী অনেকেই বলেন, পৌরসদরে নলকূপ স্থাপনের নিময় না থাকায় অফিসের লোকজনের পরামর্শে ইউনিয়নের ঠিকানা ব্যবহার করেছি। পরে তাদের সহযোগিতায় পৌরসদরে আর্সেনিকমুক্ত নলকূপ স্থাপন করেছি। এ জন্য অতিরিক্ত টাকাও খরচ করতে হয়েছে। এতে জনস্বাস্থ্য অফিসের লোকজন ও ঠিকাদার নির্মাণসামগ্রীর ইট, বালু, সিমেন্ট রেখে দিচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

মদন জনস্বাস্থ্য অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হান বলেন, নিয়মের বাহিরে কিছু নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, মদন জনস্বাস্থ্য অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হানের বিরুদ্ধে একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

নেত্রকোনার জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নলকূপ,প্রকৌশলী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close