কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

  ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

শীতের অন্যতম প্রধান ফুল ‘ডালিয়া’

ডালিয়া ফুল শীতপ্রধান অঞ্চলের অন্যতম প্রধান ফুল। সমভূমি অঞ্চলে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস অর্থাৎ শীতের মৌসুমি ফুল হিসেবে ডালিয়া ফুল চাষ করা হয়। এই ফুল সাদা, কমলা, বেগুনি ইত্যাদি রঙের হয়। অসম্ভব সুন্দর এই ফুলের নামকরণ করা হয় সুইডেনের বিখ্যাত উদ্যানতত্ত্ববিদ আন্দ্রেডালের নামানুসারে। ডালিয়া ফুল ঠান্ডা আবহাওয়ায় ভালো হয়। তবে তুষারপাত এই ফুলের জন্য ক্ষতিকর। পাহাড়ি অঞ্চলে বসন্তকালেও ডালিয়া ফুল চাষ করা হয়। ডালিয়া ফুলের পাপড়ির দৃষ্টিনন্দন বিন্যাস বর্ণ বৈচিত্র্যের জন্য এটি সবার কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ডালিয়া ফুল বিভিন্ন আকারের হয়। এই ফুলের উল্লেখ্যযোগ্য কিছু জাত হচ্ছে সিংগেল ডালিয়া, কলারেট ডালিয়া, স্টার ডালিয়া, ডেকোরেটিভ ডালিয়া, অ্যানেমনি ডালিয়া, স্টারলেট কুইন, হোয়াইট স্টার, ক্যাকটাস ডালিয়া ইত্যাদি।

রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর এলাকায় মৌলানা আব্দুস সোবহান ইসলামী গণ-পাঠাগারের বারান্দায় কবি আব্দুস সামাদের বাসার বারান্দায় শীতের ফুল ডালিয়া চাষ করতে দেখা যায়।

ফুল চাষ পরিচর্যার বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সোবহান ইসলামী গণ-পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. কাইয়ুম উদ্দিন কবি আব্দুস সামাদ বলেন, এই ফুল খুব অল্প সময়ে এমন কি মাত্র মাস খানেক সময়ের মধ্যে ফোটানো সম্ভব। নার্সারি থেকে ভালো চারা এনে টবে রোপণ করে যত্ন নিলে মাসখানেক পর থেকেই ফুল ফুটতে শুরু করবে এমন কি ভালো জাত হলে মার্চ পর্যন্ত ফুল ফোটে। ডালিয়া ফুল বীজ, কন্দ শাখা কলম পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করা যায় তবে বীজ থেকে সিঙ্গেল ডালিয়া ফুলের চারা উৎপাদন হয়। তাই ডাবল ফুল উৎপাদনের জন্য অঙ্গজ পদ্ধতিতে বংশবিস্তার করতে হয়। অঙ্গজ পদ্ধতিতে বংশবিস্তারের ক্ষেত্রে কন্দমূল বা শাখা কমল রোপণ করতে হয়। টবে ডালিয়া ফুলের চাষ করতে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো শাখা কলম।

শাখা কলম তৈরি করার ভালো উপযুক্ত সময় হলো পৌষ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত। শাখা কলম করার জন্য সুস্থ সবল শাখা নির্বাচন করতে হয় এবং যে পর্যন্ত কাটিং তৈরি করার জন্য উপযুক্ত ঠিক সেখানে ধারালো ছুড়ি দিয়ে ছাল কেটে নিতে হয়। কাটিং বেশি পরিমাণে তাড়াতাড়ি শিকড় গজানোর জন্য ডালগুলোর নিচে কাটা অংশে সামান্য পরিমাণ সেরাডিক্স বি১ হরমোন বা সুরটেক্স উদ্ভিদ হরমোন মাখিয়ে নিলে দ্রুত কলম তৈরি করা যায়। সাত থেকে আট দিনের মধ্যে ডালিয়ার শাখা কলমে শেকড় আসে। ডালিয়া ফুলের চাষের জন্য দোআঁশ মাটি উত্তম এবং মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব পদার্থ থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। ফুলের উজ্জ্বলতা এবং গাছের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ফসফেট পটাশ সার ব্যবহার করা ভালো। তবে টবে চারা রোপণের ক্ষেত্রে প্রতি টবে ২০ গ্রাম টিএসপি, ১০ গ্রাম এমওপি ১০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। টবে রোপণের জন্য ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার বা ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি আকারের টব হলে ভালো।

তিনি আরো বলেন , ডালিয়া গাছে প্রচুর পানি দিতে হয় তবে কুড়ি আসার পর পানি অল্প পরিমানে ঘন ঘন দিলে ভালো হয়। গাছের গোড়ার মাটি ঝুরঝুরে আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। তবে চারা ছোট থাকা অবস্থায় সপ্তাহে একবার এবং সেচ দেয়ার আগে মাটি আলগা আগাছা পরিষ্কার করে নিবেন। জাব পোকা, থ্রিপস দুই ধরনের মাকড় ডালিয়া গাছের বেশি ক্ষতি করে থাকে। জাব পোকা থ্রিপস ডালিয়া গাছের পাতা, কুঁড়ি ফুলের রস শোষণ করে গাছ নষ্ট করে। জাব পোকা থ্রিপস দমনের জন্য মাত্রা অনুযায়ী সাইফানন ৫৭ ইসি স্প্রে করতে হবে এবং মাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতে মাত্রা অনুযায়ী কেলথেন প্রয়োগ করতে হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ডালিয়া,ফুল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close