তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে স্থবির উত্তরের জনপদ
তাপমাত্রা কমে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে বিরাজ করছে উত্তরের হাড় কাঁপানো শীত। রাতভর টিপটিপ বৃষ্টির মতো ঝরেছে কুয়াশার শিশির। ঘরে ঘরে উহু, আহ্ ঠান্ডার গোঙানি। কনকনে শীতে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে তেঁতুলিয়ার মানুষ। রবিবার তাপমাত্রা কমে সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা শনিবার ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েক দিন ধরে ৮ এর নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ উত্তর জনপদের মানুষ।
উত্তরের এ এলাকাটি কাঞ্চনজঙ্ঘা-হিমালয় পর্বত সন্নিকটে। হিমালয় থেকে হিমেল হাওয়া ও পূবালী ঠান্ডা বাতাসে শনিবার থেকে এক লাফে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে তাপমাত্রা পারদ। তাতেই স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। সকালে ঘন কুয়াশা, উত্তরের হিম বাতাসে শীতের তীব্রতা অনুভূত হতে থাকে। রাত থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভারি শৈতপ্রবাহ ঠান্ডার প্রকোপে বিপাকে পড়েছে সর্বসাধারণ মানুষ। খড়-কুটো আগুনে জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যায় প্রান্তিক জনপদের মানুষগুলোকে।
হঠাৎ করে তাপমাত্রা নিচে নামায় ঘরের বিছানা, মেঝে ও আসবাবপত্র বরফ হয়ে উঠছে। শীত দুর্ভোগে প্রচন্ড কষ্ট পাচ্ছে শিশু থেকে বয়োজৈষ্ঠ্যরা। বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতের তীব্রতার কারণে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন দিন মজুর, পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক থেকে নানান পেশাজীবী মানুষ।
তারা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বরফের মতো ঠান্ডা লাগে। ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে পারেন না।
শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে গরম কাপড় কিনতে হাটবাজারের ফুটপাতের দোকানগুলোর দিকে ছুটছে বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ। শীত নিবারণে একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফুটপাতের দোকানগুলো। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লেগে রয়েছে মানুষের ভিড়। তারা কেউ নিম্নবিত্ত, কেউ দিন মজুর আবার কেউ মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তও।
শীতের তীব্রতার কারণে বেড়েছে শীতজনিত নানান ব্যাধি। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে জ্বর-সর্দি, কাশি, অ্যাজমা, সাইনোসাইটিস, ইসনোফিলসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিচ্ছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, শনিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। আকাশের মেঘ সরে যাওয়ার কারণে ভারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এরকম দু’চারদিন চলতে পারে। ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ থেকে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।