ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার
কমলগঞ্জে প্রায় ৫শ’ একর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত
লাঘাটা নদীতে পর্যাপ্ত পানি না আসায় সেচের অভাবে প্রায় ৫শ’ একর জমিতে বোরোর আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। কৃষকরা জানান, বোরো মৌসুমের শেষ সময়েও কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি, ভাদাইর দেউল, সতিঝির গ্রাম, মরাজানের পার এবং পতনউষার ইউনিয়নের ধূপাটিলা গ্রামে বিস্তীর্ণ জমি খাঁ খাঁ করছে। প্রতি বছর এই সময়ে কৃষকরা চারা রোপণ করলেও এ বছর এখনও জমিতে পানির দেখা নেই। উজানের বিভিন্ন ছড়া ও নদীতে পানি আটকে রাখার কারণে নিম্নাঞ্চলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এতে মৌলভীবাজারের কৃষি অধ্যুষিত কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ও পতনউষার ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামে বোরো চাষাবাদ করতে না পারায় কৃষকরা হতাশা ব্যক্ত করছেন। পানির অভাবে কৃষকের তৈরি বীজতলা বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু স্থানে মেশিনের মাধ্যমে নদী থেকে সেচ দিয়ে কৃষকরা চাষবাস করছেন। তবে সতিঝিরগ্রামে লাঘাটা নদীর স্লুইচগেট আটকানোর পরও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এতে জমি তৈরি করাও সম্ভব হচ্ছে না। অনেকের তৈরি বীজতলাও বিনষ্ট হতে চলেছে। ফলে এই পাঁচ গ্রামের প্রায় পাঁচ থেকে সাতশ’ একর বোরো জমি অনাবাদি রয়েছে। অধিকাংশ কৃষক জমি তৈরি করতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়ছেন।
ধূপাটিলা গ্রামের কৃষক তাহিদ আলী আক্ষেপ করে বলেন, এবার পানি নাই। ক্ষেত হইতো নায়। আমার হালির চারা নষ্ট হই যার। আর কোনোদিন ক্ষেত করতাম না। এখন কিতা করমু বুঝতাম পারলাম না। অনেক ক্ষতি অই যাইবো। কেছুলুটি গ্রামের ছুফি মিয়া, ধূপাটিলা গ্রামের মানিক মিয়া, আক্তার মিয়া সহ কৃষকরা বলেন, অন্যান্য বছরের এই সময়ে আমরা জমিতে চারা রোপন করে ফেলতাম। এবছর এখনও পানি না থাকায় জমিও তৈরি করা যাচ্ছে না। রোপণের সময়টুকুও অতিবাহিত হচ্ছে। ধানের চারাও নষ্ট হচ্ছে। আর কবে পানি পাওয়া যাবে এবং ক্ষেত হবে তা নিয়ে চিন্তায় আমাদের দিন কাটছে। তবে মৌসুম চলে যাওয়ার সময় হলেও কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও এসব বিষয় নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেনা না বলে তারা অভিযোগ তুলেছেন। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনি খান বলেন, কৃষকদের সেচের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব মূলত বিএডিসি’র। তবে নদীতে পানি পাওয়া যাচ্ছে না কেন সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।