মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)

  ১৫ জানুয়ারি, ২০২২

জয়রামপুরে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের হাট

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদার জয়রামপুরে ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষের পুরোনো গুড়ের হাটে বেচা কেনা জমে উঠেছে। ভালো দাম পেয়ে গাছিরা বেশ খুশি।

জানা গেছে, প্রায় একশ বছর পূর্বে দামুড়হুদার জয়রামপুর রেলস্টেশনের পাশে গুড়ের হাট বসে। সেই থেকে এই হাটে প্রতি শীত মরসুমে খেজুর গুড়ের ব্যাপক বেচা কেনা হয়ে থাকে। এলাকার গাছিরা ভোর হতেই বিভিন্ন পরিবহন যোগে গুড় বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসে। সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত গুড় কেনাবেচা শেষ হয়ে যায়।

ওজনে, বিনা ওজনে গাছিদের সাথে দরদাম করে কিনে থাকে ব্যাপারীরা। দূর দূরান্তে হতে আসা গুড়ের ব্যাপারীরা দরদাম করে নগদ টাকায় গুড় কিনে নিয়ে যায়। চলতি মরসুমে গুড়ের দাম বেশি পাওয়ায় গাছিরা একটু বেশিই খুশি।

বর্তমানে ১০০-১২০টাকা কেজি দরে গুড় বিক্রি হচ্ছে। গুড় কেনা শেষ হলে ট্রাক ভর্তি করে ব্যাপারীরা গুড় নিয়ে চলে যায়। প্রতি হাটে ৫থেকে ৬ট্রাক গুড় ব্যাপারীরা এই হাট থেকে কিনে নিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সপ্তাহে দু’দিন শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। এ দু’দিনে সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ি, পাবনা ও নাটর থেকে ব্যাপারীরা আসে গুড় কিনতে।

রাজবাড়ীর ব্যাপারী সিরাজুল ইসলাম জানান, পিতার সাথে ৪০বছর আগে থেকে এ হাটে গুট কিনতে আসি। আজও কিনে যাচ্ছি।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচির ব্যাপারী আবুল হালিম জানান, ৩৫ বছর থেকে এই হাটে গুড়ের ব্যাবসা করছি। প্রতি হাটে ১০০থেকে দেড়শ গাছান ভাড় গুড় কিনে থাকি। তার মত আরও বেশ কিছু ব্যাপারী নিয়মিত গুড় কিনে যাচ্ছে।

এ এলাকার অনেক ছোটখাটো ব্যাপারীদের গুড় কেনায় বেশ সহযোগিতা করছে। ফলে তাদের কিছু টাকা দিয়ে থাকি। দামুড়হুদার তারিনীপুর গ্রামের সাব্বির আহম্মেদ জানান, ৬ গাছান গুড় এনেছিলাম ভালো দামে বিক্রি করেছি।

দামুড়হুদার চিৎলা গ্রামের শফিকুল জানান, দশ বছর থেকে এই হাটে গুড় বিক্রি করতে আসি। গুড় বিক্রি নিয়ে কোনো প্রকার ভোগান্তি হয় না। গুড় হাটে আনার সাথে সাথেই বিক্রি হয়ে যায়।

হাটের ইজারাদার আয়ুব আলী স্বপন জানান, দুর দুরান্ত থেকে গুড়ের ব্যাপারীরা গুড় কিনতে আসে। তাদের নিরাপদে গুড় কেনাসহ সব ধরণের সহযোগিতা দেওয়া হয়। ক্রেতা বিক্রেতাদের সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। আগামীতে আরও বেশি ক্রেতা-বিক্রেতা এই হাটে গুড় কেনা বেচা করতে আসবে।

স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান হিরো জানান, শতবর্ষের পুরনো এই হাট। এক সময়ে এই হাট থেকে গুড় ও সবজি কিনে ট্রেন যোগে নিয়ে যেত। এখন বিভিন্ন পরিবহনযোগে ব্যবসায়ীরা গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
দামুড়হুদা,চুয়াডাঙ্গা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close