সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ১৫ জানুয়ারি, ২০২২

সাপাহারের নতুন সম্ভাবনা ‘বরই চাষ’

ঠাঁঠা বরেন্দ্র এলাকা খ্যাত নওগাঁর সাপাহার উপজেলা। এই এলাকার মাটির গুণগত মান ভালো। যার ফলে এই উপজেলায় কৃষি খাতে অনেকটাই সম্ভাবনাময় বরই চাষ। সারাদেশে এই উপজেলা আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফার আশায় বরই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে নানান জাতের বরই সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির বরই। শুরুতেই বাজারদর ভালো থাকার ফলে সন্তোষ প্রকাশ করছেন বরইচাষিরা। স্বল্পমেয়াদে অধিক ফলন ও লাভবান হওয়ায় বরই চাষে আগ্রহের সীমা নেই এলাকার চাষিদের।

উপজেলা সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতাউর রহমান সেলিম জানান, চলতি বছরে এই উপজেলায় মোট ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির বরই। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতগুলো হলো-কাশ্মীরি, বলসুন্দরী, বাহুকুল, আপেলকুল। তবে বেশিরভাগ চাষিরা বলসুন্দরী ও আপেলকুল চাষ করছেন। এই মৌসুমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রতি হেক্টর জমিতে ৬/৮ মেট্রিকটন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বলসুন্দরী জাতের বরই এর বাজার চাহিদা বেশ ভালো। খেতে সুস্বাদু হবার ফলে বেশিরভাগ চাষিরা বলসুন্দরী জাতের বরই চাষ করছেন। কাশ্মীরি জাতের বরই নির্ধারিত সময়ের পরে ফলন হয়। যার জন্য এই জাতের বরইও চাষ করছেন অনেকেই।

তিনি আরো বলেন, আম চাষ ব্যাপক লাভজনক। কিন্তু আম গাছ রোপণের পর প্রায় দু বছর পর আম পাওয়া সম্ভব। বরই চাষে তেমন বেশি সময় লাগেনা। স্বল্প সময়ে পাওয়া উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় এটি একটি লাভজনক চাষ বটে। যার ফলে কৃষকেরা বর্তমানে বরই চাষে ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছেন।

বরইচাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, গত বছরে তিনি বরই চাষ শুরু করেন। আবহাওয়া ও মাটির গুণগত মান ভালো হওয়ায় বরইয়ের উৎপাদন অনেক ভালো। হারভেস্টিংয়ের পরে পাইকারেরা জমিতে এসে বরই নিয়ে যাচ্ছেন। চলতি বছরে বাজারে বলসুন্দরী জাতের বরই প্রতি মণ বিক্রয় হচ্ছে ২২ থেকে ২৪ শ’ টাকা। এরকম বাজার স্থিতিশীল থাকলে বরই চাষে অনেক লাভবান হওয়া সম্ভব।

বরইচাষি ইমরান হোসেন জানান, তিনি একজন ফলচাষি । তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বরই বাগান দেখে এসে বাগান করার প্রতি উদ্বুদ্ধ হন। যার ফল স্বরূপ বিভিন্ন এলাকায় তিনি ৬০ বিঘা বরইয়ের বাগান করেছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় বরই অধিক লাভজনক চাষ বলেও জানান তিনি।

বরই বাগানে তেমন কোন পরিচর্যা করতে হয়না। প্রথমে গাছ লাগানো এবং জমি তৈরির পর কীটনাশক ও সামান্য পরিচর্যা ছাড়া কঠিন কোন পরিচর্যা করতে হয়না বলছেন বাগান পরিচর্যাকারীরা।

ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্রখ্যাত এ অঞ্চল বরই চাষে কৃষিখাতে একটি নতুন সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বরই চাষ,সাপাহার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close