আনোয়ার হোসেন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)

  ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে আলোক লতা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

প্রকৃতিতে সৌর্ন্দয্য বাড়িয়ে তোলে যে কয়েকটি লতা, তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আলোক লতা। আগে গ্রামের আনাচে-কানাচে ঔষধিগুণ সম্পন্ন পরজীবী উদ্ভিদ আলোক লতার দেখা মিললেও এখন কদাচিৎ চোখে পড়ে।

এক সময় প্রায় সব জায়গায় আলোক লতা দেখা যেত। সব মানুষই এই লতাকে চেনেন। কাঁটা জাতীয় কুল, বরই গাছই মুলত এর প্রধান আশ্রয়কেন্দ্র। একসময় গ্রামীণ পথের ধারে গাছে গাছে জালের মত বিস্তার করত আলোক লতা। এখন আলোকলতার বাসযোগ্য না থাকায় প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

শীতের পাতাঝরা প্রকৃতিতে মোহনীয় সৌন্দর্য্য ছড়ায় আলোক লতা। প্রতিটি ঋতুই ভিন্ন রূপ বৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয় প্রকৃতিতে। পৌষের শিশিরভেজা মৃদু বাতাসে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় হলুদ রঙের গালিচায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে আলোক লতা।

এমন দৃশ্য চোখে পড়ে মাগুড়া ইউনিয়ন সিংগের গাড়ি পাড়ার হাট সড়কের পাশে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঝুরি ঝুরি হলদে সুতা ঝুলে আছে। এর উপরে রোদ পড়লে চকচক করে। গ্রামে এখন খুব কমই দেখা যায় এই আলোক লতা।

হাকিম মো মোস্তাফিজুর রহমান সবুজ বলেন, আলোক লতায় ঔষধিগুণ আছে। মোটা লতা পিত্তজনিত রোগে, সরু লতা দুষিত ক্ষতে, ডায়াবেটিস ও জন্ডিস এবং বীজ কৃমি ও পেটের বায়ু নাশে খাওয়ানো হত। এ ছাড়াও পান্ডুরোগ, পক্ষাঘাত, মাংসপেশির ব্যথা, বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়। এটি রক্ত পরিস্কার করে। স্বাদে তিতা এ গাছ পিত্ত, সর্দি কাশি কমায়। খোসপাঁচড়া নিরাময়েও প্রয়োগ করা যায়। তবে বর্তমানে এর ব্যবহার নেই বললেই চলে।

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার আজিজার রহমান বলেন, আলোক লতা একটি পরজীবী উদ্ভিদ। গাছেই এর জন্ম, গাছেই এর বেড়ে ওঠা ও বংশ বিস্তার। কোন পাতা নেই, লতাই এর দেহ কাণ্ড মূল সব। সোনালী রং এর চিকন লতার মত বলে এইরূপ নামকরণ।

কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, জীবন্ত গাছে জন্ম নিয়ে অলৌকিকভাবে পরগাছকে অবলম্বন করেই টিকে থাকে। যেই গাছে জন্মায় সেই গাছের ডাল ও কান্ড থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে বংশ বিস্তার করে থাকে। পৌষ ও চৈত্র মাসে এই লতা বেড়ে উঠে ও জালের মত বিস্তার ঘটায়। দেশে সর্বত্রই আলোক লতার জন্য উপযোগী আবাসস্থল।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
প্রকৃতি,হারিয়ে যাচ্ছে,আলোক লতা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close