সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

  ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

একটি সেতুর জন্য লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ

‘একটি সেতু করে দেবেন বলে ৫০ বছর ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি কেউই। নির্বাচন এলেই তারা প্রতিশ্রুতি দেন এবার সেতু হবে। তবে নির্বাচন শেষে তাদের আর দেখা মেলে না।' দুঃখ করে কথাগুলো বলছিলেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপোগলদিঘা গ্রামের বাসিন্দা মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি জানান, কেউ কথা দিয়ে কথা রাখেন না। অবহেলা আর কষ্টে কেটে যায় চরবাসীদের জীবন।

সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপোগলদিঘা গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে ২০০ বছরের পুরোনো সুবর্ণখালি নদী। নদীটির একপাশে সরিষাবাড়ী অন্যপাশে কাজিপুর উপজেলা। নদীর দুই পাড়ে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। তারা প্রতিনিয়ত এই নদী পার হয়ে যাতায়াত করেন। তবে সেতু না থাকায় তাদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

আবু বক্করের মতোই ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় আবুল কালাম আজাদ, মামুনুর রশিদ, তারা মিয়া, শহিদুল ইসলামসহ আরও বেশ কয়েকজন।

তারা জানান, নদীর পূর্ব পশ্চিম পাড়ে সরিষাবাড়ী উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ২০-২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। সড়কপথে কাজিপুর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং নৌপথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার। শুকনো মৌসুমে নদীতে চর পড়ে যায়। তখন যাতায়াত করা আরও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। একটি সেতুর অভাবে ওই এলাকা একটি বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক সুরুজ্জামান, স্বপন, আলমগীর, সুলতান মাহমুদসহ কয়েকজন বলেন, যাতায়াতের বেহাল অবস্থার কারণে আমরা সময়মতো শহরে ফসল বিক্রি করতে পারি না। কৃষকরা লোকসান গুনছেন।

যমুনা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক সময় খেয়া পারাপারে দেরি হওয়ায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করতে পারেন না। বর্ষার সময় নদী পারাপারে তাদের প্রায়ই ভিজতে হয়। অনেক সময় ভেজা পোশাকেই ক্লাস করতে হয়।

উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুর রহমান বলেন, খুব দ্রুতই জায়গাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জামালপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সায়েদুজ্জামান সাদেক বলেন, যেহেতু জায়গাটি এলজিইডির আওতাভুক্ত তাই সামনে নতুন কোনো সেতুর অনুমোদন পেলে এই সেতুটির নাম অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মানুষের দুর্ভোগ,সেতু
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close