গাজী মোঃ শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ২৪ নভেম্বর, ২০২১

মাশকলাইয়ে স্বপ্ন বুনছে যমুনা চরের কৃষক

ছবি- প্রতিদিনের সংবাদ

যমুনা নদীবিধৌত সিরাজগঞ্জের কৃষকেরা এখন মাশকলাই চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে । গতবছর মাষকলাই চাষে লাভের মুখ দেখায় এবছর এই ফসল চাষে অধিক আগ্রহ দেখা গেছে কৃষকদের মাঝে।

প্রতিবছরই যমুনাভাঙন জনপদের কাজিপুর উপজেলায় হাজার হাজার আবাদি জমির ফসল বন্যায় তলিয়ে যায়। কৃষকরা হয়ে পড়েন দিশেহারা । এ অবস্থার উত্তোরণে কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শে নানান ধরনের সবজি চাষে নামে কৃষকরা। তবে গত দুই বছর মাশকলাইয়ে স্বপ্ন বুনছে কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্তাদের পরামর্শে নদীপাড়ের উর্বর পলিতে আদিকালের পদ্ধতি পরিহার করে এখন আধুনিক পদ্ধতিতে মাশকলাই চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা । তাই যমুনার পূর্বপারে দিগন্তজোড়া চর মাষকলাইয়ে ছেয়ে গেছে। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ ।

কাজিপুর উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়নে এ বছর মাশকলাই চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন হয়েছে৭১৫ হেক্টর । গতবছর এই অঞ্চলে মাশকলাই চাষ হয়েছিল ৫৫০ হেক্টর জমিতে।

আরও জানা গেছে, বন্যা পরবর্তী সময়ে মাশকলাই চাষ হয় । সেই সুবাদে চরাঞ্চলের ছয় ইউনিয়নে এই ফসল বেশি ফলে। বন্যার পানি নেমে যাবার সাথে সাথে জুলাই আগস্ট মাসে মাশকলাইয়ের বীজ রোপন করা হয়।

মনসুরনগর ইউনিয়নের চাষি মানিক মিয়া জানান, এ বছর দুই বিঘা জমিতে মাশকলাই চাষ করেছি। এই চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ হয় বেশি। সার ও পানির খরচও কম।

ছরগিরিশের চাষি আব্দুর রহমান বলেন, নিজের তিন বিঘার পাশাপাশি আরও ১ বিঘা বর্গা নিয়ে মাশকলাই লাগিয়েছি। কৃষি বিভাগের লোকেরা আমাদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন।

তেকানীর চাষি হেলাল উদ্দিন বলেন, মাশকলাই আবাদ করার পর ধানের আবাদ করলে ফলন ভালো হয়। আর বন্যার পর তো জামি পতিতই থাকে। সেখানে কলাই চাষ করে বাড়তি আয়ও হচেছ। প্রতি বিঘায় ৫-৭ মন পর্যন্ত মাশকলাই পাওয়া যায়।

কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম জানান, কৃষকরা যেন অধিক লাভবান হতে পারেন সে জন্য কৃষি অফিস সব সময় পাশে আছে। মাশকলাই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারিভাবে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ভালো ফলন পেতে আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবু হানিফ প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, এবার কাজিপুর, চৌহালী, সিরাজগঞ্জ সদর সহ সমগ্র জেলায় মাষকলাইয়ের উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ছিলো ১০,১০০ হেক্টর জমি। আর আবাদ হয়েছে ৯,৯১০ হেক্টর জমিতে । সরকারিভাবে আমরা প্রায় ৬ হাজার কৃষককে প্রনোদনা প্রদান করেছি। অতি বৃষ্টি আর বন্যাজনিত কারণে লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা ব্যহত হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মাশকলাই,কৃষক,যমুনার চর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close